চারশত পুরুষেরও সর্বনাশ করেছেন রকস্টার বাবা!
ভারতে সাধারণ মানুষদের বোকা বানিয়ে ধর্মের আড়ালে ভিন্ন ব্যবসার ফাঁদ পেতে অনেকেই হয়েছেন ধর্মগুরু বা বাবা। সেই বাবাদের আশ্রয়ে গিয়ে শুধু মহিলা ভক্তরাই নির্যাতিত হননি। পুরুষরাও সর্বশান্ত হয়েছে। পুরুষত্ব হারাতে হয়েছে অনেককে।
সম্প্রতি ভণ্ড বাবা রাম রহিমের বিরুদ্ধেও এমন অভিযোগ উঠেছে, তিনি তারা আশ্রমে থাকা ও তার কাছে দীক্ষা নিতে আসা চারশত পুরুষ পুরোহিতকে নিবীর্যকরণ(নপুংশক) বা পুরুষত্বহীন করেছেন ডাক্তার দিয়ে।
প্রসঙ্গত, ইসলাম, হিন্দু ও শিখ ধর্মের মিশ্রণে তৈরি করেছেন একটি নতুন ধর্ম। সেই ধর্মের গুরু তিনি। এজন্য নিজের নামও রেখেছেন রাম রহিম সিং। শিখ, হিন্দু, মুসলিম- সব ধর্মের চেতনা মিশিয়ে বাবা রাম রহিম তৈরি করেছেন তার আশ্রম- ডেরা সাচ্চা সওদা। বিবিসি লিখেছে, একাধারে ধর্মপ্রচারক, সমাজ সংস্কারক, গায়ক, চিত্রনায়ক ও পরিচালক বাবা রাম রহিমের মতো বর্ণময় চরিত্র ভারতের অজস্র ধর্মগুরুর মধ্যেও বিরল।
অজ্ঞাতপরিচয় এক মহিলার দেয়া ধর্ষণের অভিযোগের চিঠি যায় ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কাছে। চিঠির সূত্র ধরে ২০০২ সালে এই ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করে সিবিআই। সেখানে বলা হয়, ১৯৯৯ সালে নিজের আশ্রমে দুই শিষ্যাকে ধর্ষণ করেন রাম রহিম। ২০০৭ সালে শুনানি শুরুর পর দশ বছরের মামলাটি রায়ের পর্যায়ে আসে। বিচারের পুরোটা সময় নিজেকে নির্দোষ দাবি করে এসেছেন তিনি।
ভক্তদের কাছে তিনি ভগবান। অথচ সেই গুরু রাম রহিমের বিরুদ্ধে যে যে অভিযোগ বিভিন্ন সময় উঠেছে, তাতে তাঁকে ঘিরে রহস্য ক্রমশ ঘনীভূত হয়েছে। ধর্ষণ মামলায় দোষী প্রমাণিত হওয়ার পরে সেই পুরনো অভিযোগগুলিই মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।
স্বঘোষিত এই গডম্যানের বিরুদ্ধে যদি প্রধান অভিযোগ হয় ধর্ষণ, তাহলে তার বিরুদ্ধে ওঠা অন্যতম অভিযোগ হল প্রায় চারশো সাধুর জোর করে নিবীর্যকরণ। যদিও, ডেরা সচ্চা সওদার এক সাধু কিন্তু আদালতে হলফনামা দিয়ে রাম রহিমের বিরুদ্ধে জোর করে সাধুদের নিবীর্যকরণের অভিযোগ করেছিলেন। তার সঙ্গেও একই ঘটনা ঘটেছিল বলে অভিযোগ করেন ওই সাধু।
একটি সর্বভারতীয় হিন্দি দৈনিকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, হরিয়ানার ফতেহবাদের বাসিন্দা হংসরাজ চৌহান ২০১২ সালে হলফনামা আকারে পঞ্জাব এবং হরিয়ানা হাইকোর্টে এই অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। বাবা রাম রহিমের নির্দেশেই ডেরা সচ্চার হাসপাতালের চিকিৎসকরা সাধুদের নিবীর্যকরণ করতেন। যে সাধুদের সঙ্গে এমন করা হয়েছিল, সেরকম ১৬৬জন সাধুদের নামের তালিকাও আদালতে জমা দিয়েছিলেন ওই অভিযোগকারী।
এমনকী, রাম রহিমের কীর্তি ফাঁস করেছিলেন বলে রামচন্দ্র ছত্রপতি নামে সাংবাদিক খুনে অভিযুক্ত নির্মল এবং কুলদীপ নামে দুই সাধুও নপুংশক ছিলেন বলে হলফনামায় অভিযোগ করা হয়েছিল।
জেলবন্দি ওই দুই সাধু স্বীকারও করেছিলেন যে তারা নপুংশক। এই সংক্রান্ত মামলাটিও আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন