রোহিঙ্গাদের রক্ষায় সীমান্ত খুলে দেয়ার আহ্বান জাতিসংঘের

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে রোহিঙ্গাদের উপর মিয়ানমার নিরাপত্তা বাহিনীর দমন পীড়নের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সংস্থার মুখপাত্র আদ্রিয়ান ওডওয়ার্ড এক বিবৃতিতে রোহিঙ্গাদের রক্ষায় সীমান্ত খুলে দিতে বাংলাদেশ সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন। এজন্যে বাংলাদেশের সমর্থন পেতে ইউএনএইচসিআর দেশটির সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছে বলেও বিবৃতিতে বলা হয়।

ইউএনএইচসিআর জানায়, মিয়ানমারে সহিংসতা শুরু হওয়ার পর গত বৃহস্পতিবার থেকে রোববার পর্যন্ত প্রায় ৫ হাজার ২শ’ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর আরও কয়েক হাজার মানুষ মিয়ানমার সীমান্তের ধারে অবস্থান করছেন বলেও তাদের কাছে খবর আছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে আশ্রয়প্রার্থী বেশ কিছু মানুষ এখনও প্রবেশের অনুমতি না পাওয়ায় সীমান্তের নো ম্যানস ল্যান্ড’এ অবস্থান করছেন। এদের মধ্যে বৃদ্ধ, নারী ও শিশুসহ আহত মানুষও রয়েছে।

অসহায় মানুষদের সাহায্যে এরইমধ্যে বাংলাদেশ সরকার এগিয়ে এসেছে বলেও বিবৃতিতে বলা হয়। এছাড়াও স্থানীয় সম্প্রদায়, জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার অংশীদার সংগঠন এবং কিছু বেসরকারি সাহায্য সংস্থা কাজ করে যাচ্ছে। পালিয়ে আসা এসব মানুষকে খাদ্য, পানীয় এবং চিকিৎসা সহায়তা দেয়া হচ্ছে।

বিবৃতিতে রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীকে সাহায্য করায় জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানায়। তবে পালিয়ে আসা মানুষদের জন্য সহায়তার সুযোগ পেলেও মিয়ানমার সীমান্তের ওপারে আটকে থাকা অসহায় রোহিঙ্গাদের জন্য সংস্থা উদ্বেগ প্রকাশ করে। আগামী দিনগুলোতে সেসব মানুষদের সাহায্যের প্রয়োজনীয়তা আরও বৃদ্ধি পাবে বলেও বিবৃতিতে বলা হয়।

‘মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের বিজিবি আটকে দিচ্ছে’ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমন খবরের বিষয়েও জাতিসংঘ অবহিত জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, এমন অবস্থান ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেবে। বাংলাদেশ সরকার গত কয়েক দশক ধরে রোহিঙ্গা নাগরিকদের আশ্রয় দিয়ে আসছে উল্লেখ করে ইউএনএইচসিআর জানায়, প্রাণহানি বন্ধে এই প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখা উচিত।
বাংলাদেশের মহৎ কাজে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেও সাহায্য নিয়ে এগিয়ে আসা উচিৎ বলে বিবৃতিতে জানায় ইউএনএইচসিআর। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বিশেষ করে রাখাইনে দুর্গত মানুষদের সাহায্যের প্রয়োজন হলেও প্রবেশের সীমাবদ্ধতা জারি রেখেছে সে দেশের সরকার। এজন্যে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, তাদের কর্মীদের নিরাপত্তা এবং দুর্গত এলাকায় ত্রাণ পৌঁছে দেয়ার সুবিধার্থে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হোক।