‘সরকার রাখাইনের প্রত্যেক নাগরিককে রক্ষার চেষ্টা করছে’

মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের নেত্রী অং সান সু চি বলেছেন, তাঁর সরকার সংঘাতকবলিত রাখাইন রাজ্যের প্রত্যেক নাগরিককে রক্ষার জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার ‘এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনাল’-এর সঙ্গে আলাপকালে এ মন্তব্য করেন সু চি। তবে তিনি রাখাইন রাজ্যে নির্যাতনের শিকার সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিষয়ে কোনো কিছু বলেননি।

বার্তা সংস্থার খবরে বলা হচ্ছে, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের শিকার হয়ে রাখাইন থেকে এ পর্যন্ত দেড় লাখেরও বেশি মুসলিম রোহিঙ্গা সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এ ছাড়া নাফ নদী পার হয়ে বাংলাদেশে আসতে গিয়ে এ পর্যন্ত নারী-শিশুসহ ৮৫ জনের করুণ মৃত্যু হয়েছে।

আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি বা আরসা নামে একটি গোষ্ঠী গত ২৫ আগস্ট ভোরে রাখাইনের কয়েকটি পুলিশ চৌকিতে অতর্কিতে হামলা চালায়। এ ঘটনার পর সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা অধ্যুষিত মংডু, রাথেডাং, বোথেডাং এলাকায় অভিযান চালায়। সেনা অভিযানে এ পর্যন্ত চার শতাধিক বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে, যার বেশির ভাগই রোহিঙ্গা।

মিয়ানমারে মোট ১১ লাখ রোহিঙ্গার বসবাস, যারা দীর্ঘদিন ধরে বৌদ্ধপ্রধান মিয়ানমারে জাতিগত নিপীড়নের শিকার।

রোহিঙ্গা নির্যাতনের ঘটনায় পশ্চিমা পর্যবেক্ষকদের অনেকেই ১৯৯১ সালে শান্তিতে নোবেলজয়ী অং সান সু চির কঠোর সমালোচনা করেছেন। এমনকি অনেকে তাঁর নোবেল পুরস্কার কেড়ে নেওয়ার কথাও বলেছেন। তাঁদের কথা, সু চি রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছেন।

অং সান সু চি বলেন, ‘আমাদের নাগরিকদের রক্ষা করতে হবে। আমাদের সবাইকে রক্ষা করতে হবে, যারা আমাদের দেশে আছে, এমনকি তারা আমাদের নাগরিক না হলেও।’

এর আগে ইয়াঙ্গুনে ভারতের সফররত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে সু চি বলেন, ‘অবশ্যই আমাদের সম্পদ যথাযথ নয় এবং পর্যাপ্তও নয়। কিন্তু আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের এটা নিশ্চিত করতে হবে, প্রত্যেকে আইনের সুরক্ষা পাওয়ার অধিকারী।’

মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি মঙ্গলবার ভুয়া তথ্যের অবাধপ্রবাহে মিয়ানমারের রাখাইনের পরিস্থিতি বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, এ ধরনের সংবাদ উগ্রপন্থীদের সাহায্য করছে। এটা ছিল রাখাইনে নতুন করে রোহিঙ্গা সংকট শুরু হওয়ার পর প্রথমবারের মতো দেওয়া বক্তব্য। সূত্র: রয়টার্স