ঈদের সবচেয়ে আলোচিত নাটক ‘বড় ছেলে’র যে অসঙ্গিতগুলো চোখে পড়ে
ঈদের সবচেয়ে আলোচিত নাটকের নাম ‘বড় ছেলে’। ফেসবুকের কল্যাণে নাটকটি অনলাইন দুনিয়ায় ভাইরাল হয়ে গেছে এখন। এমনকি নাটকটির নামে কয়েকটি ইভেন্ট পেজও খোলা হয়েছে। একটা মধ্যবিত্ত পরিবারের সাধারণ গল্পকে অসাধারণভাবেই উপস্থাপন করেছেন নাটকটির নির্মাতা মিজানুর রহমান আরিয়ান। তবে যতটা আলোচিত হচ্ছে ততটা কি আছে এই নাটকে? প্রশ্ন রেখেছেন অনেকেই।
তবুও নাটকের অস্থির এ সময়ে এটাকে স্বস্তির গল্প বলেই বিবেচনা করা হচ্ছে। খাইছি দাইছি ,জাইগা খাইগা ভাষার ভাড়ামি সমৃদ্ধ নাটকের এ সময়ে নিরেট মধ্যবিত্ত পরিবারের ক্রাইসিসের এ নাটকটি বেশ গ্রহণ করেছেন দর্শকরা।
এতে বড় ছেলের চরিত্রে অভিনয় করেছেন অপূর্ব আর তার প্রেমিকা চরিত্রে রয়েছেন মেহজাবিন। নাটকটি দেখে দর্শকের মনে উঠে এসেছে নানা প্রশ্ন। যতটা প্রশংসিত হচ্ছে নির্মাণে এতোটা কী মুন্সিয়ানা রয়েছে এ নাটকে? কোন অসঙ্গতিই কী নেই এতে? অবশ্যই রয়েছে। বাস্তব জীবনের সঙ্গে যারা নাটকটি বিবেচনা করছেন তারাই নাটকির ভুলগুলোও দেখতে পেয়েছেন। প্রশংসার পরে এ অসঙ্গতিগুলো নিয়েই আলোচনা চলছে এখন। আলোচিত সেই অসঙ্গতিগুলো কী?
১. বড় ছেলে নাটকটিতে অপূর্বের বিষন্নমাখা মুখখানা ছাড়া মোটেও অভাবগ্রস্থ মনে হয়নি। কারণ গায়ে একশার্ট দুইবার দেখা যায়নি। সাথে সবসময় চুলে জেল লাগিয়ে পরিপাটি করে রাখার বিষয়টি তো ছিলোই।
২. বড় ছেলের মতো বাস্তবতায় কোটি কোটি রাশেদ আছে। কিন্তু সেখানে ৪০ লাখ টাকার গাড়িতে বসে ১০ টাকার বাদামের অপেক্ষায় একটা মেহজাবিনও পাওয়া যাবে না কোথাও। তাই এটিকে বাস্তবতাবর্জত বলেই মনে হয়েছে।
৩. অপূর্বের বাবা একজন স্কুল শিক্ষক। নাটকের মাঝামাঝি সময়ে রিটায়ার্ড করেন তিনি। কিন্তু সেভিংস এ কোন টাকা নেই। তার রিটায়ারমেন্টের টাকা কই গেল? বাস্তবে এই টাকা ব্যাংকে থাকতো।
৪. নাটকে অপূর্বর মধ্যবিত্ত ফ্লাট ও মেহজাবিনের উচ্চবিত্তের মধ্যে কোন পার্থক্য চোখে পড়েনি।
৫. অপূর্ব তার গার্লফ্রেন্ডের কথা বাসায় একবারও বলেনি। বললে হয়তো দুই ফ্যামিলি মিলে কোন ব্যবস্থা করতে পারতো। বাস্তবের দুনিয়ায় তাদের বিয়ে হতো তা না হলে তাদের প্রেম আগেই ভেস্তে যেত।
৬. অপূর্ব ও মেহজাবিন দুজনেই উচ্চ শিক্ষিত তারপরও বিয়ে করার রিস্ক নেয়নি। যেখানে একজনের ইনকামেই সংসার চলার কথা সেখানে উচ্চ শিক্ষিত দুইটা মানুষ এ রিস্কটা নিতে পারেনি।
৭. ভালো রেজাল্ট নিয়ে দুই বছর ধরেও চাকুরী পায় না অপূর্ব এটা যৌক্তিক মনে হয়নি। ভালো রেজাল্টের তার মতো স্মার্ট ছেলেদের চাকুরীর অভাব হয় না।
৮. অপূর্বের বাবা ভালো ম্যাথ টিচার। বাস্তবে এ ধরনের শিক্ষকরা স্কুলের বাইরেও প্রাইভেট ব্যাচ পড়িয়ে অনেক টাকা আয় করতে পারেন। অথচ তিনি সেটা করেননি। রিটায়মেন্টের পর অভাব থাকলেও বাসায় বসেই সময় পার করেন। অথচ বাস্তবে হলে সে প্রাইভেট পড়াতেন কোচিংয়ে ক্লাস নিতেন। এখন সবাই জানে ম্যাথের কোচিং বা প্রাইভেট পড়ালে কী পরিমাণ আয় করা সম্ভব।
তবে অসঙ্গতি যাই হোক। নাকটি এবারের ঈদে হিট। দর্শকরা নাকটি গ্রহণ করেছে। তাদের আবেগে নাড়া দিতে পেরেছে বড় ছেলে। এটিই বা কম কিসের!
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন