রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে কলেরার আশঙ্কা
বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে কলেরা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সম্প্রতি মিয়ানমারের উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে নতুন করে আরও ৪ লাখ ৩৫ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
যার ফলে সোমবার এ আশঙ্কার কথা উল্লেখ করে ডব্লিউএইচও এক বিবৃতিতে জানায়, শরণার্থীরা সীমান্ত এলাকায় ৬৮টি ক্যাম্প ও অস্থায়ী আবাসে অবস্থান নেয়ার এক মাস পর সেখানে নিরাপদ পানি ও স্বাস্থ্য সুবিধার অভাব দেখা গেছে।
সংস্থাটি আরও জানায়, পর্যাপ্ত খাদ্য ও জরুরী ওষুধের মারাত্মক অভাব দেখা দিয়েছে বিশ্বের অন্যতম বড় এ শরণার্থী শিবিরে। অনিরাপদ পানি থেকে রোগ ছড়িয়ে পড়ার অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে আছে এসব ক্যাম্প, যার কারণে কলেরা ছড়িয়ে পড়ার আশংকা করা হচ্ছে। এ কারণে আমরা উদ্বেগ প্রকাশ করছি।
নতুন করে বিপুল পরিমান শরণার্থী আশ্রয় নেয়া দেশটির কক্সবাজারের পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করেছে, ইতিমধ্যে সেখানে আগ থেকে আরও ৩ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম আশ্রয় নিয়েছিল, যারা আগের বছরগুলোতে সহিংসতার কারণে রাখাইন থেকে এখানে পালিয়ে আসে।
ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, ইতিমধ্যে সেখানে মোবাইল মেডিক্যাল সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। তবে বাংলাদেশ স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে যে, গত এক মাসে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার রোহিঙ্গা ডায়রিয়া রোগের চিকিৎসা এবং প্রায় ৮০ হাজার শিশুকে হাম এবং পোলিও টিকা দিয়েছে। ইতিমধ্যে গত সপ্তাহে দুইজন বয়স্ক রোহিঙ্গা ডায়রিয়া রোগে মারা গেছে বলে জানিয়েছেন উখিয়ার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের উপ প্রধান এনায়েত হোসেন এএফপিকে জানান, “আমরা এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। কিন্তু এর পরেও আমরা উদ্বিগ্ন।”
এ ছাড়াও স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, গত এক মাসে গুলিবিদ্ধ ও ধারালো অস্ত্রের ক্ষতসহ নানাভাবে আঘাত পাওয়া দুই হাজার ৩৬৪ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে। ডায়রিয়া রোগী ছাড়াও চর্মরোগে দুই হাজার ৩৩৫ জন ও শ্বাসনালীর সংক্রমণে আক্রান্ত সাত হাজার ৯৬৯ জন রোহিঙ্গা চিকিৎসা নিয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ইতিমধ্যে রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য সেবায় ৪০টিরও বেশি সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা কাজ করছে। এর মধ্যে সরকারের মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ৮টি প্রতিষ্ঠান, আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থার ১৪টি, স্থানীয় বেসরকারি সংস্থার ৯টি ও জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট ৭টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। শরণার্থীদের জন্য নবনির্মিত আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ১২টি স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে, যেগুলোর প্রত্যেকটি কেন্দ্রে পরিদর্শকসহ চিকিৎসক, নার্স, ধাত্রী ও প্যারামেডিক থাকবে। সূত্র, এএফপি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন