ইমিগ্রেশনে আটকে গেলেন স্ত্রী, একাই অস্ট্রেলিয়ার পথে প্রধান বিচারপতি
ছুটি কাটাতে অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহা। শুক্রবার রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে একাই অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন তিনি। তার সঙ্গে স্ত্রী সুষমা সিনহার যাওয়ার কথা থাকলেও তিনি যাননি বলে জানা গেছে।
স্ত্রী সুষমা সিনহাকে নিয়েই ১০টা ৩০ মিনিটে বিমানবন্দরে প্রবেশ করেন প্রধান বিচারপতি। কিন্তু ইমিগ্রেশনে তার স্ত্রীকে আটকে দেয়া হয় বলে এক ইমেগ্রেশন কর্মকর্তা সূত্রে জানা যায়। এসময় সুষমা সিনহা অনেক অনুরোধ জানালেও তাকে ছাড়া হয়নি। তখন আবেগঘন পরিস্থিতিতে স্বামী স্ত্রী দুজনেই চোখ ভেজান। স্ত্রী সিনহা অনেক কান্নাকাটি করছিলেন বলে জানা যায়।
পরে রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন তিনি। মাঝখানে বিরতির জন্য ৪৫ মিনিট অবস্থান করবেন সিঙ্গাপুরে। সেখান থেকে সাত ঘন্টার ভ্রমণে অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছাবেন বিচারপতি সিনহা।
এর আগে রাত ১০টার দিকে রাজধানীর হেয়ার রোডের বাসভবনের সামনে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমি সম্পূর্ণ সুস্থ আছি। কিন্তু ইদানিং একটা রায় নিয়ে রাজনৈতিক মহল, আইনজীবী, বিশেষভাবে সরকারের মাননীয় কয়েকজন মন্ত্রী ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে ব্যক্তিগতভাবে যেভাবে সমালোচনা করেছেন, এতে আমি সত্যিই বিব্রত।’
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমার দৃঢ় বিশ্বাস, সরকারের একটি মহল আমার রায়কে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে পরিবেশন করায় প্রধানমন্ত্রী আমার প্রতি অভিমান করেছেন। এই অভিমান অচিরেই দূর হবে বলে আমার বিশ্বাস।’
প্রসঙ্গত, গত ১ অক্টোবর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা এক মাসের ছুটির কথা জানিয়ে চিঠি দেন। পরে তার ছুটি আরো নয় দিন বাড়িয়ে ১০ নভেম্বর করা হয়েছে।
এই ছুটি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, প্রধান বিচারপতি ক্যান্সারে আক্রান্ত, নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। এজন্য তিনি একমাসের ছুটি চেয়েছেন।
ওই সময় প্রধান বিচারপতির ছুটির আবেদন সাংবাদিকদের দেখান আইনমন্ত্রী। এতে লেখা ছিল, ‘আমি ইতিপূর্বে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন ছিলাম। বর্তমানে আমি শারীরিক জটিলতায় ভুগছি।’
উল্লেখ্য, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর সরকার ও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। ৭৯৯ পৃষ্ঠার রায়ে সরকার, সংসদ, রাজনীতি, নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ, সামরিক শাসন এবং রাষ্ট্র ও সমাজের বিভিন্ন বিষয়ে এমন অনেক পর্যবেক্ষণ উঠে এসেছে, যা সরকারের বৈধতা নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ করে বলে মনে করেন সরকারের শীর্ষমহল। রায়ের বিভিন্ন পর্যবেক্ষণ সেইসাথে এতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সম্মানহানি ও সমালোচনা করা হয়েছে বলেও ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের দাবিও তোলা হয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন