পেট কেটে বের করতে হলো সিগারেট লাইটার!
প্রবল পেটের যন্ত্রণায় কাবু এক ব্যক্তি। আর শেষমেশ পেট কেটে যা বের হল তাতে চক্ষু চড়কগাছ চিকিৎসকদের।
কারণ, পেট থেকে বের হল আস্ত একটা সিগারেট লাইটার। সম্প্রতি আমেরিকার ফ্লোরিডায় এই ঘটনা।
জানা গেছে, আমেরিকার ফ্লোরিডায় বছর ৪৯ বছরের এক ব্যক্তি ২০১৬ সালের অক্টোবরে পেটব্যাথা, বমি এবং গা-গোলানোর উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসকদের দ্বারস্থ হন। তার শারীরিক অবস্থাই এতটাই শোচনীয় ছিল যে তাকে জরুরি বিভাগে ভর্তি করতে হয়েছিল। এক্স-রে করে দেখা যায় ওই ব্যক্তির পেটের ভিতরে একটি লম্বাটে জিনিস ঢুকে আছে। যার আকারটা অনেকটা সিগারেটের লাইটারের সঙ্গে মিলে যায়।
চলতি বছরেরই সামনে এসেছে এক মেডিকেল জার্নাল রিপোর্ট। ‘কেস রিপোর্ট ইন এমার্জেন্সি মেডিসিন’ নামে এই মেডিকেল জার্নালেই লেখা হয়েছে এই ব্যক্তির কথা। ওই ব্যক্তির চিকিৎসা করেছিলেন ইউনিভার্সিট অফ ফ্লোরিডা কলেজ অফ মেডিসিনের চিকিৎসক অসীম শুজা।
তিনি ওই জার্নালের রিপোর্টে লিখেছেন, পেটের ভিতরে থাকা ‘ফরেন বডি পার্ট’-এর জেরে ব্যক্তিটির আলসার হয়ে গিয়েছিল। দেখা যায় পেটের ভিতরে থাকা লম্বাটে ওই জিনিসটি থেকে সমানে তরল জাতীয় কিছু পদার্থ বেরিয়ে আসছিল, যা পাকস্থলীতে ঘা তৈরি করছিল।
পরে ক্যামেরার মাধ্যমে পরীক্ষা-নিরিক্ষা চালিয়ে চিকিৎসকরা নিশ্চিত হন পাকস্থলীতে থাকা লম্বাটে জিনিসটি আসলে লাইটার। শেষমেশ এন্ডস্কোপ নামক একটি যন্ত্রকে মুখের ভিতর দিয়ে পাকস্থলীতে পাঠানো হয়। ওই যন্ত্রের সাহায্যেই বের করে আনা হয় ৫ মিলিমিটার লম্বা লাইটারটি।
রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে ব্যক্তিটি কোনও এক সময়ে লাইটারটি গিলে ফেলেছিলেন। সেই থেকে তা পাকস্থলীতেই জমেছিল। মেডিকেল লিটারেচারের মতে এটা ছিল বিশ্বের তিন নম্বর ঘটনা। তবে, আমেরিকার বুকে এই ধরনের ঘটনা প্রথম ঘটেছিল বলে রিপোর্টটিতে দাবি করা হয়েছে।
এই মেডিকেল জার্নাল রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, লাইটারটি থেকে টক্সিক জাতীয় তরল বের হচ্ছিল। যার জন্য পাকস্থলীতে আলসার তৈরি হয়। এই টক্সিক জাতীয় তরলের মধ্যে ন্যাপথা, বেঞ্জিন, বুটানে, ল্যাকোলেনে, প্রোপানে-এর মতো ভয়ঙ্কর রাসায়নিক।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, সিগারেট লাইটের আকৃতি সাধারণত পেটের মধ্যে থাকার মতো হয় না এবং লাইটার থেকে রাসায়নিক লিক করাটাও স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু, পেটের মধ্যে এই ঘটনা শরীরের পক্ষে ভয়ঙ্কর বলেই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে।
যদিও, চিকিৎসক অসীম শুজার দাবি, ফরেন বডি পার্ট থেকে আলসার হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। কিন্তু, ইলেক্ট্রনিক লাইটার হলে তার মধ্যে ব্যাটারি থাকে। সেখান থেকেও নানা ধরনের অ্যাসিড লিক করারও আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। ওই ব্যক্তি গত এক বছর ধরে সুস্থই আছেন বলে জানা গেছে। কিন্তু, কী ভাবে ওই ব্যক্তি সিগারেট লাইটারটিকে উদরাস্ত করেছিলেন তা জানা যায়নি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন