গণ‌জোয়ার শুরু হ‌লে প্রশাসনও সরকা‌রের বিপ‌ক্ষে যা‌বে : মওদুদ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, সরকার পরিবর্তনের গণজোয়ার শুরু হলে প্রশাসন ও পুলিশ ক্ষমতাসীনদের পক্ষে থাকবে না। তারা জনগণের কাতারে চলে আসবে।

আজ শনিবার ‌বি‌কে‌লে জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভা ও গুণীজন সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মওদুদ আহমদ এ কথা বলেন।

সভায় মওদুদ আহমদ বলেন, ‘দেশের মানুষ সরকারের পরিবর্তন চায়। একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হলে সরকার বুঝতে পারবে তাদের জনপ্রিয়তা কোথায় নেমে গেছে। পুলিশ-র‍্যাব দিয়ে কতদিন আপনারা দেশ চালাবেন? সরকার পরিবর্তনের জন্য যখন গণজোয়ার উঠবে, তখন যে প্রশাসন ও পুলিশ সরকারের পক্ষে আছে, তারাই আবার জনগণের কাতারে এসে জনগণের সঙ্গে হাত মেলাবে। এটা আমাদের অভিজ্ঞতায় দেখেছি। আইয়ুব খানের আমল থেকে শুরু করে আমরা সর্বত্র দেখেছি।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‘খালেদা জিয়ার যাত্রাপথে বাধা সৃষ্টি করে কোনো লাভ হবে না। শত বাধা আমাদেরকে রোধ করতে পারবে না। গণতন্ত্র ও দেশে মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য, আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। খালেদা জিয়া যে উদ্যোগ নিয়েছেন, আমরা তাঁর সাথে থাকব। যেখানে খুশি সেখানে আমরা যাব এবং জনমত সৃষ্টি করব।’

নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনের চিন্তা করে থাকলে সরকার ভুল করবে মন্তব্য করে মওদুদ আহমদ বলেন, সহায়ক সরকার হচ্ছে এমন একটি সরকার যে সরকারের রাজনৈতিক স্বার্থ থাকবে না। অর্থাৎ এটা একটা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার। যে সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে, নির্বাচনে সেনাবাহিনী থাকতে হবে এবং নির্বাচনের ৯০ দিন আগে সংসদ ভেঙে দিতে হবে।

মওদুদ আহমদ বলেন, ‘আজকে সরকার যদি মনে করে তারা এখন যে অবস্থায় আছে, ছয় মাস পরে একই অবস্থায় থাকবে- তাহলে তারা ভুল করছে। তাদের তখন সমঝোতায় আসতে হবে। আর যদি সমঝোতায় না আসে দেশের মানুষ রাস্তায় নামবে, গণবিস্ফোরণ হবে। সেই বিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে অতীতে যেমন সরকারের পরিবর্তন হয়েছে, বর্তমান সরকারও ভোটের মাধ্যমে পরিবর্তন হবে ইনশাল্লাহ।’

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য ১৮ ব্যক্তিকে গুণীজন সম্মননা দেওয়া হয়। অতিথিরা তাঁদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন।

সম্মাননা পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন- ভাষা আন্দোলনে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, রাজনীতিতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান ও শামসুজ্জামান দুদু, বাংলা সাহিত্যে কবি আবদুল হাই শিকদার, মুক্তিযুদ্ধে মো. শোকরানা, আইনজীবী অঙ্গনে ব্যারিস্টার সাইফুর রহমান, সফল সংগঠক মুহাম্মদ সাইদুর রহমান, সাংবাদিকতায় নয়া দিগন্তের স্টাফ রিপোর্টার খালিদ সাইফুল্লাহ, সমাজসেবায় ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনির ও মো. মাইনুল ইসলাম।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি আমির হোসেন বাদশার সভাপতিত্বে ও শাহবাগ থানা কৃষক দলের সভাপতি এম জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় সভায় আরো বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আহসান হাবিব লিংকন, বিএনপির সহ-যুব বিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ফোরকানী আলম, সাবেক ছাত্রনেতা শাহ আব্দুল্লাহ আল বাকী, কৃষক দল নেতা শাহজাহান মিয়া সম্রাট, আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবদুল লতিফ হেলাল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুর আলম সোহাগ প্রমুখ।