হনুমানের মৃত্যু, শোকে স্তব্ধ গ্রামবাসী!

কয়েকদিন পরই শ্রাদ্ধ। হবে কীর্তন।

নিমন্ত্রিত হবেন গোটা মহল্লাবাসী। কি, ভাবছেন কে মরলো আবার? ঠিকই ভেবেছেন, মরেছে। তবে কোন মানুষের মৃত্যু নয়! মৃত্যুর কাছে হার মেনেছে এক হনুমান। আর এ হনুমানকে ঘিরেই শোকে স্তব্ধ গোটা এলাকা।

ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়ার লালবাজারে। এর আগে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায় হনুমানটি। তাকে ঘিরে আবেগের স্রোত বাঁকুড়া শহরে। শোকস্তব্ধ স্থানীয়রা। রীতিমতো শোকমিছিল বের করে তাকে সমাধিস্থ করে এলাকার মানুষজন।

সমাধির ওপর গড়ে তোলা হবে মন্দির।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কয়েক মাস ধরে এলাকায় গাছে গাছে ঘুরে বেড়াচ্ছিল ওই পূর্ণবয়স্ক হনুমানটি। কারও কোন ক্ষতি করতো না। পাড়ার বাসিন্দাদের দেওয়া ফলমূল খেয়েই দিন কাটাত সে। ধীরে ধীরে পাড়ার আপনজন হয়ে উঠছিল হনুটি। শনিবার সকালে বিদ্যুতের তারের স্পর্শে উপর থেকে পড়ে যায় সে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় হনুমানটির।

চোখের সামনে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ার কথা বর্ণনা করতে গিয়ে ডুকরে কেঁদে ওঠেন ওই এলাকার বাসিন্দা গৃহবধূ মিতা কর্মকার। আক্ষেপ নিয়ে তিনি বলেন, এত দ্রুত বিষয়টি ঘটে যায় যে বন দফতরকে খবর দেওয়ারে সময়টুকু পেলাম না।

মৃত পবনপুত্রের মৃতদেহের সামনে এলাকার মানুষ ভিড় জমান। পরে বিদ্যুতের তারে নতুন গামছা ঝোলানো হয়। মৃতদেহর পাশে ধূপ জ্বালিয়ে, ফুলের মালা পরিয়ে শ্রদ্ধা জানান এলাকার মানুষজন। পরে দুপুরের দিকে গর্ত খুড়ে তাকে সমাধিস্থ করেন এলাকার যুবকরা। তারাই সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেন হনুমান মন্দির গড়ার।

স্থানীয়র জানান, সবাই চাঁদা তুলে তহবিল গড়ে শ্রাদ্ধ করা হবে। পাশাপাশি গড়া হবে মন্দির।

উল্লেখ্য, কয়েক দিন আগে পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোণার বাওড়া গ্রামে এক পবনপুত্রের মৃত্যু হয়। সেখানেও যথাযথ সম্মান দিয়ে শ্রাদ্ধ-শান্তি করে মন্দির গড়ার জন্য চাঁদা তোলেন এলাকার বাসিন্দারা। স্থানীয়রা বলছেন, গত কয়েক বছরে বাঁকুড়া শহর জুড়ে হনুমান মন্দির তৈরি হয়েছে বেশ কয়েকটি। বাঁকুড়া শহরের কলেজ রোড, চাঁদমারি ডাঙা রোড, লোকপুর, কেন্দুয়াডিহি, দোলতলা। সর্বত্রই একই ছবি। হনুমানকে শ্রদ্ধা দেখানোর হিড়িক। সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন