বাচ্চু পরিবারের ব্যাংক লেনদেনের তথ্য চেয়েছে দুদক

বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চু ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক লেনদেনের সকল তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি পাঠিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রোববার বিকেলে দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এ চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।

দুদকের উপ-পরিচালক শামসুল আলম স্বাক্ষরিত চিঠিতে আবদুল হাই বাচ্চু, তার স্ত্রী, দুই সন্তানসহ পরিবারের মোট ১০ সদস্যের লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য এবং তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ক্রাউন প্রোপার্টিজ, বিএম কম্পিউটার্স এবং ইডেন ফিসারিজ লিমিটেডের আর্থিক লেনদেনের তথ্য চাওয়া হয়েছে।

এর আগে গত ১৮ ডিসেম্বর আবদুল হাই বাচ্চুর অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়ে উপ-পরিচালক শামসুল আলমকে অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ দেয় দুদক।

জানা গেছে, আবদুল হাই বাচ্চু বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান থাকার সময় স্ত্রী শেখ শিরিন আখতার, ছেলে শেখ সাবিদ হাই অনিক ও মেয়ে শেখ রাফা হাইকে সঙ্গে নিয়ে খুলেছিলেন ইডেন ফিশারিজ লিমিটেড নামের একটি কাগুজে প্রতিষ্ঠান।

এ প্রতিষ্ঠানের নামে খোলা স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক হিসাবে মাত্র ১১ মাসেই জমা হয় প্রায় ১৩ কোটি টাকা। আবার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেওয়া টাকা সরাসরি জমা হয়েছে বাচ্চু ও তার ভাই শাহরিয়ার পান্নার ব্যাংক হিসাবে।

২০১২ ও ২০১৩ সালে কয়েক মাসের ব্যবধানে দু’জনে মিলে ৩০ কোটি টাকার বেশি অর্থ নেওয়ার প্রমাণ পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ পরিদর্শন টিম। মূলত এই টিমের প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই দুদক বাচ্চুর অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়।

এদিকে, গত ১৭ ডিসেম্বর তৃতীয়বারের মতো জিজ্ঞাসাবাদের কথা থাকলেও ‘অসুস্থতার’ কারণ দেখিয়ে এক মাসের সময় চেয়ে দুদকে লিখিত আবেদন করেন আবদুল হাই বাচ্চু।

চিঠিতে তিনি রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কথা জানিয়েছেন। যদিও বাচ্চুর আবেদন নাকচ করে শিগগিরই তাকে আবারো দুদক তলব করবে বলে জানা গেছে।

বেসিক ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় ২০১৫ সালের ২১, ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর তিন দিনে টানা ৫৬টি মামলা করে দুদক।

রাজধানীর মতিঝিল, পল্টন ও গুলশান থানায় করা এসব মামলায় আসামি করা হয় ১৫৬ জনকে। তবে কোনো মামলায় ব্যাংকটির তৎকালীন চেয়ারম্যান বাচ্চুকে আসামি করা হয়নি।