জানুয়ারিতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪২৫ জন
জানুয়ারি মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন দেশে গড়ে ১৪ জন নিহত ও ৩১ জন আহত হয়েছেন। অর্থাৎ এক মাসে ৪২৫ জন নিহত এবং ৯৫০ জন আহত হয়েছেন। প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটেছে গড়ে ১৩টি।
এ ছাড়া একই মাসে রেলপথে ৩২টি দুর্ঘটনায় চার শিশুসহ ২৮ জন নিহত ও ১১ জন আহত এবং নৌপথে ১০টি দুর্ঘটনায় ছয়জন নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছেন।
বেসরকারি সংগঠন নৌ সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির (এনসিপিএসআরআর) নিয়মিত মাসিক জরিপ ও পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সংগঠনটি এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। দেশের ২২টি বাংলা ও ইংরেজি জাতীয় দৈনিক, ১০টি আঞ্চলিক সংবাদপত্র এবং আটটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও সংবাদ সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে এই পরিসংখ্যান তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নৌ সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে।
আশীষ কুমার দে বলেন, ‘সড়ক নৌ ও রেলপথে দুর্ঘটনার জন্য প্রধানত চারটি সংস্থাই বেশি দায়ী। সেগুলো হচ্ছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), নৌ পরিবহন অধিদপ্তর, বিআইডাব্লিউটিএ এবং বাংলাদেশ রেলওয়ে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত মাসে সারা দেশে ৪০৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৪ নারী ও ৩০ শিশুসহ ৪২৫ জন নিহত এবং ৯৫০ জন আহত হয়েছে। পহেলা জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন সড়ক, মহাসড়ক, জাতীয় সড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে এসব প্রাণঘাতি দুর্ঘটনা ঘটে।
এ ছাড়া ইঞ্জিন বিকল হয়ে ২৫০ জন যাত্রীবোঝাই একটি পর্যটক জাহাজ চার ঘণ্টা বঙ্গোপসাগরে ভেসে বেড়ানোসহ অভ্যন্তরীণ নৌপথে কয়েকটি বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলেও প্রাণহানি না ঘটনায় সেসব কাহিনী অধিকাংশ গণমাধ্যমে প্রচার পায়নি। আর রেলপথে নিহতদের অধিকাংশ পথচারী এবং অসতর্কভাবে রেলপথ পার হতে গিয়ে তারা দুর্ঘটনার শিকার হন।
জাতীয় কমিটির পর্যবেক্ষণে বলা হয়, সড়ক পরিবহন খাতে বিরাজমান বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর নজরদারির অভাবই দুর্ঘটনা বৃদ্ধির প্রধান কারণ। এই খাতের শৃঙ্খলা ফেরাতে কয়েকটি পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
সেগুলো হলো চাঁদাবাজি বন্ধ, শ্রমিক-কর্মচারীদের নিয়োগপত্র ও সাপ্তাহিক ছুটি প্রদান, বেতন-ভাতা বৃদ্ধি ও দৈনিক কর্মঘণ্টা নির্ধারণ, ত্রুটিপূর্ণ গাড়ি চলাচল ও জাল লাইসেন্সধারী চালকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যাবস্থা গ্রহণ, চালক ও সহকারিদের সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ প্রদান, ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক চিহ্নিতকরণ ও বেহাল সড়ক সংস্কার এবং বিদ্যমান মোটরযান চলাচল আইন যথাযথভাবে প্রয়োগ।
এ ছাড়া পর্যবেক্ষণে নৌ নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে নৌ পরিবহন অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডাব্লিউটিএ) এবং রেলক্রসিংগুলোতে দুর্ঘটনা রোধে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও দায়িত্বহীনতাকে দায়ী করা হয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন