৪ কিলোমিটার পথ হামাগুড়ি দিয়ে পরীক্ষায় উপস্থিত তমালিকা
পঙ্গু হলেও যদি কারোর শিক্ষা অর্জনের প্রবল ইচ্ছা থাকে তাহলে হয়তো তাকে আটকানো যায় না। তমালিকা খাতুন নামের তেমনি এক শিক্ষার্থীর খোঁজ পাওয়া গেল। যার পা দুটি উল্টো, বাঁকা ও সরু। এর পরও থেমে থাকেনি সে। মনের জোরে সে বাড়ি থেকে প্রায় চার কিলোমিটার পথ হামাগুড়ি দিয়ে এবারের দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে।
জানা গেছে, তমালিকার বাড়ি বগুড়ার ধুনট উপজেলার এলাঙ্গী ইউনিয়নের রাঙ্গামাটি দিদারপাড়া গ্রামে। রাঙ্গামাটি বালিকা দাখিল মাদ্রাসা থেকে এবার দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে সে।
তমালিকার পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শিক্ষা জীবনের শুরু থেকেই তমালিকা হামাগুড়ি দিয়ে এবং ভাইয়ের সাহায্যে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করছে। এভাবে করেই সে ২০০৭ সালে পিএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় এবং ৩.৬৫ পেয়ে কৃতকার্যও হয়। কিন্তু পরিবারে অভাব-অনটনের কারণে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় তার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়। তখন নিজের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে বাড়িতে বসেই টুপি সেলাই করত তমালিকা। এ কারণে তার চার বছর লেখাপড়া বন্ধ ছিল। অবশেষে ২০১৫ সালে আবারও মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে সে জেডিসি পরীক্ষায় অংশ নেয় এবং ১.৮৫ পেয়ে কৃতকার্যও হয়।
তমালিকার এই প্রবল ইচ্ছাশক্তির ব্যাপারে জানতে চাইলে তার বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘তমালিকার সমবয়সী অন্য সব ছেলে-মেয়ে যখন রোজ বিদ্যালয়ে যেত, তখন সে কান্নাকাটি করত। কিন্তু স্কুলে যাওয়ার সামর্থ্য ছিল না তার। এদিকে বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্ব প্রায় ১ কিলোমিটার। তমালিকার ইচ্ছাশক্তি দেখে তিনি নিজের কাজ বন্ধ করে কখনো কোলে করে আবার কখনো সাইকেলে করে নিয়ে বিদ্যালয়ে দিয়ে আসেন।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন