বিএনপির মিছিলে পুলিশের লাঠিপেটা, আটক ২৫
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রায়ের প্রতিবাদে আজ শনিবারও দলের নেতা-কর্মীরা মিছিল করেছে। তবে পুলিশের লাঠিপেটায় মিছিলটি খুব বেশি দূর এগোতে পারেনি। এ সময় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহসভাপতি নবীউল্লাহসহ ২৫ জনকে আটক করা হয়।
সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের জেল হয়েছে। নিম্ন আদালতে এ রায় ঘোষণার পর সারা দেশে তাৎক্ষণিকভাবে বিক্ষোভ করে বিএনপি। পরদিন শুক্রবার বায়তুল মোকাররম মসজিদে জুমার নামাজ শেষে শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল করে। মিছিলটি নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। মিছিলের পুরো সময়টায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ সতর্ক পাহারায় ছিল। তবে আজ মিছিলটিকে বেশি দূর এগোতে দেয়নি পুলিশ। দলীয় কার্যালয়ের কাছে পৌঁছানোর আগেই ফকিরাপুল পানির ট্যাংকের কাছে পুলিশ লাঠিপেটা করে মিছিল ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় আটক করা হয় নেতা-কর্মীদের।
মতিঝিল অঞ্চলের পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে নেতা-কর্মী আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মতিঝিল ও রমনা অঞ্চল এবং শাহবাগ থানা-পুলিশ মিছিল থেকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহসভাপতি নবীউল্লাহ নবীসহ প্রায় ২৫ জনকে আটক করেছে। এ সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।
আজ বেলা দেড়টায় বায়তুল মোকাররম মসজিদের হাউস বিল্ডিংয়ের গলি থেকে মিছিল শুরু হয়। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক মিছিলের নেতৃত্ব দেন। দৈনিক বাংলা মোড়ে আসার পর মিছিলে যোগ দেন যুবদলের সভাপতি সাইফুল ইসলাম নিরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবুসহ দলের আরও নেতা-কর্মী। ফকিরাপুল পানির ট্যাংকের কাছে আসার পর মিছিলে নেতা-কর্মীর সংখ্যা আরও বাড়ে। তবে এ স্থান অতিক্রম করার পর পর পুলিশ লাঠিপেটা করে নেতা-কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় এবং কয়েকজনকে আটক করে। মিছিলে আরও ছিলেন দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী, শহীদুল ইসলাম বাবুল, হারুনুর রশিদ, আ ক ম মোজাম্মেল হক, খান রফিউল ইসলাম প্রমুখ।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বয়স ও সামাজিক মর্যাদার কথা বিবেচনা করে খালেদা জিয়ার পাঁচ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। যদিও একই অভিযোগে তাঁর বড় ছেলে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ পাঁচজনের ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর এতিম তহবিলে ইউনাইটেড সৌদি কমার্শিয়াল ব্যাংক থেকে ১২ দশমিক ৫৫ লাখ মার্কিন ডলার আসে, যা বাংলাদেশি টাকায় তৎকালীন ৪ কোটি ৪৪ লাখ ৮১ হাজার ২১৬ টাকা। তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় ১৯৯১ সালের ৯ জুন থেকে ১৯৯৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই অর্থ দেশের প্রতিষ্ঠিত কোনো এতিমখানায় না দিয়ে অস্তিত্ববিহীন জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট গঠন করেন। অথচ কোনো নীতিমালা তিনি তৈরি করেননি, করেননি কোনো জবাবদিহির ব্যবস্থাও। অথচ খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীর এতিম তহবিল থেকে ২ কোটি ৩৩ লাখ ৩৩ হাজার ৫০০ টাকা অস্তিত্ববিহীন জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টে পাঠান। পরে ওই টাকা আত্মসাৎ করেন, যার জন্য তিনি দায়ী।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন