সর্বোচ্চ স্কোর গড়েও হার বাংলাদেশের

টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ কখনো ২০০ পেরোতে পারেনি। এটাই বলে দিচ্ছে সংক্ষিপ্ত সংস্করণের এই খেলাটি এখনো ধাঁধা হয়ে আছে বাংলাদেশের জন্য। আজ একসময় আশা জাগছিল, সেই মাইলফলক হয়তো পেরোবে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ৫ উইকেটে ১৯৩ রান করে থেমেছে বাংলাদেশ। এটাই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোর। অথচ এই স্কোর গড়েও বাংলাদেশকে হারতে হলো! বৃথা গেল নতুন দলীয় সর্বোচ্চ রেকর্ড।

বাংলাদেশের মতো উড়ন্ত সূচনা করে শ্রীলঙ্কাও। দানুষ্কা গুনাথিলাকা আর কুশল মেন্ডিস উদ্বোধনী জুটিতেই তুলেন ৫৪ রান। এ জুটিটা ভাঙেন নাজমুল ইসলাম অপু। অভিষিক্ত এ বাঁ-হাতি স্পিনারের বলটা মিস করে মুশফিকের বুদ্ধিদীপ্ত স্ট্যাম্পিংয়ে সাজঘরে ফেরেন ৩০ রান করা গুনাথিলাকা।

তবু ঝড়ো ব্যাটিং চালিয়েই যাচ্ছিলেন কুশল মেন্ডিস। মাত্র ২৭ বলে ৫৩ রান করা এ ব্যাটসম্যানকে শেষপর্যন্ত আউট করেন আফিফ হোসেন। এরপর উপুল থারাঙ্গার ক্যাচটিও নেন অভিষিক্ত এ অলরাউন্ডার। নাজমুল অপুকে তুলে মারতে গিয়ে অভিজ্ঞ এ ব্যাটসম্যান আউট হন মাত্র ৪ রান করে।

এরপর রুবেল হোসেনের বাউন্সি এক ডেলিভারিতে পুল করেন নিরোশান ডিকভেলা। ৯ বলে ১১ করা এ ব্যাটসম্যানের বাতাসে ভাসানো বলটি অনেক ওপরে উঠলেও বাউন্ডারিতে দাঁড়িয়ে দারুণভাবে ধরে ফেলেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।

তবে পরের সময়টায় বাংলাদেশি বোলারদের আর পাত্তা দেননি লঙ্কান ব্যাটসম্যানরা। দাসুন শানাকা আর কুশল পেরেরা মিলে ৩০ বলে ৬৫ রানের বিধ্বংসী জুটিতে জয় নিশ্চিত করে দেন শ্রীলঙ্কার। পেরেরা করেন ১৮ বলে অপরাজিত ৩৯ রান, শানাকা ২৪ বলে ৪২।

এর আগে, সৌম্য সরকার আর মুশফিকুর রহীমের জোড়া হাফসেঞ্চুরিতে মিরপুরে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৫ উইকেটে ১৯৩ রানের বড় পুঁজি গড়ে বাংলাদেশ।

তামিম ইকবালের অনুপস্থিতিতে সৌম্য সরকারের সঙ্গে ইনিংস উদ্বোধন করেন জাকির হাসান। অভিষেক ম্যাচে খুব একটা ভালো করতে পারেননি তিনি। ৯ বলে ১০ রান করে দানুষ্কা গুনাথিলাকার বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন এ ওপেনার।

তবে অফফর্মের কারণে ওয়ানডে আর টেস্ট দল থেকে বাদ পড়লেও টি-টোয়েন্টি ফরমেটটা যে ভীষণ উপভোগ করেন, সেটা আরও একবার বুঝিয়ে দিয়েছেন সৌম্য। মিরপুরে ব্যাট হাতে রীতিমতো তাণ্ডব দেখিয়েছেন এ ওপেনার।

হাফসেঞ্চুরির আগমুহূর্তে অবশ্য একটু বল খরচ করেছেন, তারপরও ৩০ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন সৌম্য। টি-টোয়েন্টি ফরমেটে বাঁ-হাতি এ ওপেনারের এটি ছিল প্রথম হাফসেঞ্চুরি।

জীবন মেন্ডিসের লেগস্পিনে এলবিডব্লিউ হয়ে ৫১ রানে ফিরেন সৌম্য। জীবন মেন্ডিসের ঘূর্ণিতে এলবিডব্লিউ হওয়ার পর মাটিতে পড়ে গিয়েছিলেন এ ওপেনার। উরুতে চোট নিয়ে এরপর খুঁড়িয়ে খুড়িয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে তাকে। পরের বলেই উইকেটরক্ষকের দুর্দান্ত ক্যাচে শূন্য করে সাজঘরে ফেরেন অভিষিক্ত আফিফ হোসেন।

টানা দুই উইকেট হারিয়ে তখন কিছুটা বিপদে বাংলাদেশ। চতুর্থ উইকেটে দুর্দান্ত এক জুটিতে সেই বিপদ কাটিয়ে উঠেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আর মুশফিকুর রহীম। লঙ্কান বোলারদের রীতিমতো তুলোধুনো করে ৭৩ রান যোগ করেন এ যুগল।

সৌম্য সরকারের পর মাত্র ৩৭ বলে হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন মুশফিকুর রহিমও। তবে ফিফটির আশা জাগিয়েও সাজঘরে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ। বাঁ-হাতি পেসার ইসুরু উদানাকে তুলে মারতে গিয়ে আউট হন ৪৩ রানে। ৩১ বলের ইনিংসে টাইগার অধিনায়ক ২টি করে চার-ছক্কা হাঁকান।

এরপর সাব্বির রহমান ফিরেন ১ রান করে। তবে শেষ পর্যন্ত দলের হাল ধরে ছিলেন মুশফিক। ৪৪ বলে ৬৬ রানে অপরাজিত থাকেন ডানহাতি এ ব্যাটসম্যান। দুর্দান্ত এ ইনিংসটি তিনি সাজিয়েছেন ৭টি চার আর একটি ছক্কায়। আরিফুল হক অপরাজিত থাকেন ১ রানে।

এক নজরে দেখে নিন বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ১০ স্কোর

স্কোর প্রতিপক্ষ ভেন্যু তারিখ
১৯৩/৫ শ্রীলঙ্কা ঢাকা ১৫ ফেব্রু ২০১৮
১৯০/৫ আয়ারল্যান্ড বেলফাস্ট ১৮ জুলাই ২০১২
১৮৯/৯ নিউজিল্যান্ড ঢাকা ৬ নভে ২০১৩
১৮১/৭ শ্রীলঙ্কা পাল্লেকেলে ৩১ মার্চ ২০১৩
১৮০/২ ওমান ধর্মশালা ১৩ মার্চ ২০১৬
১৭৯/১ ওয়েস্ট ইন্ডিজ ঢাকা ১০ ডিসে ২০১২
১৭৬/৯ শ্রীলঙ্কা কলম্বো ৬ এপ্রিল ২০১৭
১৭৫/৬ পাকিস্তান পাল্লেকেলে ২৫ সেপ্টে ২০১২
১৭৫/৯ দক্ষিণ আফ্রিকা ব্লুমফন্টেন ২৬ অক্টো ২০১৭
১৬৮/৭ জিম্বাবুয়ে বুলাওয়ে ১২ মে ২০১৩