‘খুনের আসামির জামিন হয়, খালেদার কেন নয়’
দুর্নীতির মামলায় সাজার বিরুদ্ধে করা আপিল গ্রহণ হলেও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে জামিন না দেয়ার সমালোচনা করেছেন নজরুল ইসলাম খান।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘খুনের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ও দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্তরা জামিন পেলেও খালেদা জিয়াকে জামিন দেয়া হচ্ছে না। অনেক খুনের আসামির আপিল গ্রহণের সাথে সাথেই জামিন হচ্ছে। কিন্তু খালেদা জিয়ার জামিনের জন্য নথির কথা বলা হচ্ছে।’
সোমবার দুপুরে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক নার্স সমাবেশে এসব কথা বলেন বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরামের এই নেতা।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজার রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার পক্ষে উচ্চ আদালতে আপিল হয় গত ২০ ফেব্রুয়ারি। ২২ ফেব্রুয়ারি সে আপিল গ্রহণ করে জরিমানার সাজা স্থগিত করেন বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি সহিদুল আলমের বেঞ্চ।
একই বেঞ্চ ২৫ ফেব্রুয়ারি জামিন আবেদনের ওপর শুনানি করলেও আদেশ দেননি। বিচারিক আদালত থেকে নথি আসলে পরে আদেশ দেয়ার কথা জানিয়েছে হাইকোর্ট বেঞ্চ। এর আগে ২২ ফেব্রুয়ারি ১৫ দিনের মধ্যে সে নথি পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিল একই বেঞ্চ।
এই জামিন শুনানিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবীর পাশাপাশি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা মাহবুবে আলমও জোরালো অবস্থান নেন। খালেদা জিয়াকে জামিন না দিয়ে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির আর্জি জানান অ্যাটর্নি জেনারেল।
নজরুল ইসলাম খান মনে করেন, জিয়ার জামিন না হওয়ায় সরকার বিপাকে পড়েছে। তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে সরকার প্রতিহিংসামূলক সাজা দিয়ে কারাগরে পাঠিয়েছে। কিন্তু দেশের মানুষ এটাকে ভালোভাবে নেয়নি। সবাই সরকারের এমন আচরণের নিন্দা জানিয়েছে। খালেদা জিয়ার জামিনে বাধা দিয়ে সরকার চোরাবালির আরো গভীরে পৌঁছেছে।’
সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে খালেদা জিয়া ছাড়াও শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের দলের অনেক নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা হয়েছিল বলে জানান নজরুল ইসলাম খান। বলেন, ‘কিন্তু খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের মামলাগুলো সচল রাখা হয়েছে শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে।’
‘বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এক এগারোর সরকার ১৫টি মামলা করেছে। তিনি যখন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন তখন তার মাথার উপর ১৫টি দুর্নীতির মামলা ছিল। কিন্তু সেগুলোকে আদালতের মাধ্যমে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে।’
দুই কোটি ১০ লাখের কিছু বেশি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলায় সাজা হয়েছে খালেদা জিয়ার। কিন্তু বর্তমানে হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন নজরুল ইসলাম খান। বলেন, ‘দুই কোটি টাকার জন্য খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের সাজা হলে হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতির জন্য কত বছর জেল হবে?’
‘শেয়ারবাজার, হলমার্ক, বিসমিল্লাহ গ্রুপের কেলেঙ্কারির জন্য কত বছর সাজা হবে? বিচারের হাত থেকে বাছার জন্যই এসব লুটেরা দুর্নীতিবাজরা চায়য় বর্তমান সরকার আবার ক্ষমতায় থাকুক।’
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও জনতা পার্টির সমালোচনা করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আপনারা বলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতা আপনাদের দলে যোগ দেবেন। কই আজ আপনারা? কয়জন বিএনপির সিনিয়র নেতা বা কর্মী আপনাদের দলে যোগ দিয়েছে?’।
‘আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন