স্বামীর পাশেই ঘুমিয়ে থাকবেন আফসানা খানম
বনানী সামরিক কবরস্থানে ক্যাপ্টেন আবিদ সুলতানকে যে কবরে দাফন করা হয়েছে, তার ঠিক পাশের কবরটাতেই চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন আফসানা খানম টপি। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায় মারা গেছেন তিনি।
১২ মার্চ নেপালের কাঠমান্ডুতে ত্রিভুবন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে ইউএস বাংলার উড়োজাহাজ বিধ্বস্তে স্বামীর মৃত্যুর খবর কয়েক দিনের মাথায় স্ট্রোক করেন টপি। স্বামী হারানোর শোক আর কাটিয়ে ওঠা হয়নি তার।
স্বামী মারা যাওয়ার পর নিজে অসুস্থ হওয়ার আগে টপি একদিন বলেছিলেন, যা হারিয়েছি তা অপূরণীয়। কোনো কিছুতে তা আর পূরণ হওয়ার নয়।
অসুস্থ হওয়ার পর থেকে আগারগাঁওয়ের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
সকালে টপির মৃত্যুর পর তারা দাফনের বিষয়ে কথা হয় ফুফাতো ভাই শাহিনুল ইসলাম শাহিনের সঙ্গে। তিনিই বলেন, বনানী সামরিক কবরস্থানে আবিদের কবরের পাশে দাফন করা হবে টপিকে। পরে একই কথা জানান আবিদের ছোট ভাই ডা. খুরশিদ মাহমুদও। জানিয়েছে সেক্টর ১২ পার্কের পাশে মসজিদে জানাজা
তিনি বলেন, হসপিটাল থেকে অফিসিয়ালি ডিক্লারেশন পাওয়ার পর আমরা মরদেহ উত্তরার বাসায় নেব।
খুরশিদ মাহমুদ জানান, উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরে আবিদ ও টপি যে বাসায় ভাড়া থাকতেন ওই এলাকার মসজিদে জানাজা শেষে আসরের নামাজের পর তাকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড হসপিটালের মেডিকেল অফিসার ডা. কাজী একরাম হোসেন বলেন, সকাল সাড়ে ৯টায় মারা গেছেন টপি। এই হাসপাতালে তার চিকিৎসায় যা যা করার দরকার ছিল তার সবকিছু করা হয়েছে।
হাসপাতালের আনুষ্ঠানিকতা শেষে আবিদ সুলতানের ছোট ভাই এবং টপির বাবার কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে বলেও জানান তিনি।
গত ১২ মার্চ দুপুর ১২টা ৫১ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইউএস বাংলার বোম্বার্ডিয়ার ড্যাশ ৮ কিউ৪০০ মডেলের এস২-এজিইউ বিমানে ৭১ জন আরোহী নিয়ে কাঠমান্ডুর উদ্দেশে রওনা করেন পাইলট আবিদ। বিমানটি কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সময় রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে এবং আগুন ধরে যায়।
ঠিক কী কারণে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে ইউএস বাংলার দাবি পাইলট আবিদের কোনো দোষ ছিল না। বরং ত্রিভুবন বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল রুম (এটিসি) থেকে পাইলট আবিদকে বিভ্রান্তিমূলক নির্দেশনা দেয়া হয়।
দুর্ঘটনার পর ইউএস বাংলার কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বলেছিলেন, ‘কন্ট্রোল টাওয়ারের সঙ্গে পাইলটের কথোপকথনের যে অডিও বের হয়েছে, সেখানে কন্ট্রোল টাওয়ারের কিছু মিস গাইডেন্স দেখেছি আমরা। আমরা তদন্তের পর সঠিক কারণ পুরোপুরি বলতে পারবো। প্রাথমিকভাবে আমরা বুঝতে পেরেছি ক্যাপ্টেনের এখানে কোনও দোষ নেই। কারণ, তার ৭০০ ঘণ্টারও বেশি ফ্লাইট পরিচালনা এবং এই এয়ারপোর্টে শতাধিক ল্যান্ডিং এর নজির আছে।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন