১১ বছর পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে লিভারপুল

লিভারপুল সর্বশেষ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল খেলেছিল সেই ২০০৭ সালে। এসি মিলানের বিপক্ষে সেই ফাইনালে ২-১ গোলে হেরেছিল স্টিভেন জেরার্ডের দল। মাঝে পেরিয়ে গেছে ১১টি বছর। দীর্ঘ এই সময় পর জার্মান কোচ ক্লপের হাত ধরে আবারো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠলো ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের অন্যতম সফল দলটি। সেমিফাইনালে রোমার কাছে ২-৪ গোলে হেরেও দুই লেগ মিলিয়ে ৭-৬ গোলে এগিয়ে থেকে অষ্টমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে জায়গা করে নেয় তারা।

এনফিল্ডে প্রথম লেগে ৫-২ গোলের জয়ে ফাইনাল অনেকটা নিশ্চিত করে ফেলেছিল লিভারপুল। তবুও বার্সার বিপক্ষে পিছিয়ে থেকে সেমিতে ওঠার ম্যাচটিকে অনুপ্রেরণা হিসেবেই নিয়েছিল রোমা। ম্যাচের প্রথম মিনিট থেকেই গোলের জন্য আক্রমণ করতে থাকে জেকোরা। ৬ মিনিটে ফ্লোরেঞ্জির দূরপাল্লার শট গোলবারের বাইরে দিয়ে চলে যায়। ৯ মিনিটেই ম্যাচের প্রথম গোলের দেখা পায় লিভারপুল। কাউন্টার অ্যাটাক থেকে রবার্তো ফিরমিনোর কাছ থেকে বল পেয়ে ডিবক্সের ভেতর থেকে বা পায়ের দুর্দান্ত শটে গোল করে লিভারপুলকে ১-০ গোলে এগিয়ে দেন সাদিও মানে। কিন্তু ১৫ মিনিটেই সমতায় ফেরে রোমা। জেমস মিলনারের আত্মঘাতী গোলে ১-১ গোলের সমতায় ফেরে তারা। তখনো রোমার দরকার অন্তত ৪ গোল।

খেলার ২৫ মিনিটে রোমাকে ম্যাচে টিকিয়ে রাখেন এলিসন। মানের নেয়া দুর্দান্ত শট রুখে দেন এই ব্রাজিলিয়ান গোলকিপার। কিন্তু সেই মিনিটেই রোমার ফাইনালের স্বপ্ন কার্যত শেষ করে দেন লিভারপুলের ডাচ ফুটবলার ওয়াইনালদাম। হেড থেকে করা তার গোলে ২-১ গোলের লিড পায় ক্লপের দল। ফাইনালে যেতে হলে তখন রোমাকে করতে হবে কমপক্ষে ৫ গোল। এমন অসম্ভবকে সম্ভব করার মিশনে এগিয়ে যেতে থাকে রোমা। ৩৫ মিনিটে এলশেরাইর শট গোলবারের লেগে ফিরে আসলে গোল বঞ্চিত হয় রোমা।

এগিয়ে থেকে বিরতি থেকে ফিরেও পাঁচ গোল দেয়ার মিশনে খেলতে থাকে রোমা। গোলও পেয়ে যায় তারা। ৫২ মিনিটে জেকোর গোলে ম্যাচে সমতায় ফেরে ইতালিয়ান জায়ান্টরা। তখনও ম্যাচে টিকে থাকতে তাদের দরকার ৩ গোল। ৫৬ মিনিটে জেকোর হেড গোলবারের উপর দিয়ে চলে যায়। ৬০ মিনিটে ডি রসির শট রুখে দেন লিভারপুল গোলকিপার কারিউস।

৬৩ মিনিটে জেকোর দুর্দান্ত শট গোলমুখের সামান্য বাইরে থেকে ব্লক করে লিভারপুল ডিফেন্ডার আলেক্সান্ডার আর্নল্ড। ৭১ মিনিটে রোমার গোনালসের শট শুধু আশাই ভঙ্গ করে তাদের। আক্রমণের পসরা সাজিয়ে বসা ম্যাচে ৮০ মিনিটে জেকোর আরেকটি শট রুখে দেন আলেক্সান্ডার। ম্যাচের ৮৬ মিনিটে নাঙ্গোইলানের গোলে ৩-২ গোলে এগিয়ে যায় রোমা। ৪ মিনিটে অন্তত দুই গোল দরকার রোমার ম্যাচে টিকে থাকতে।

ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ের শেষ মিনিটে ডিবক্সের ভেতরে ক্লাভেনের হ্যান্ডবলের সুবাদে পেনাল্টি পায় রোমা। স্পট কিক থেকে গোল করে কেবল ব্যবধানই কমিয়েছেন নাঙ্গোইলান। দ্বিতীয় লেগে ২-৪ গোলে হেরেও দুই লেগ মিলিয়ে ৭-৫ গোলের জয়ে ২০১১-১২ মৌসুমের পর প্রথম ইংলিশ দল হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে চলে গেল লিভারপুল। ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ ১২ বারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ।