গাজীপুরে ‘আরো গোছানো’ নির্বাচন করতে চায় ইসি
ঈদের কয়েকদিন পরই হতে যাচ্ছে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন। এ নির্বাচনে জয় পেতে মরিয়া প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। তাই রোজার এই মাসে ইফতার ঘিরে চলছে তাদের প্রচার। আর খুলনার নির্বাচন নিয়ে সমালোচনায় থাকা নির্বাচন কমিশন (ইসি) চাইছে অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে গাজীপুরে ‘আরো পরিচ্ছন্ন’ নির্বাচন উপহার দিতে। এজন্য ইসি জোর চেষ্টা চালাবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, কোনো নির্বাচনই শতভাগ ত্রুটিমুক্ত করা সম্ভব নয়। এর মধ্যেই নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করতে আমরা চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখিনি। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনেও কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকে, সে হিসাবে আমাদের নির্বাচনও শতভাগ ত্রুটিমুক্ত হওয়া সম্ভব নয়, তবে বিগত নির্বাচনগুলোর অভিজ্ঞতায় আমরা আরো গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে চাই।
রফিকুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনে ত্রুটি কমিয়ে আনতে বিগত কয়েকটি সিটি নির্বাচনের অভিজ্ঞতায় আরো গোছানো, আরো সতর্কতামূলক একটি নির্বাচন উপহার দিতে আমরা বদ্ধপরিকর। তিনি বলেন, বিগত সিটি নির্বাচনগুলোয় যেখানে যে ত্রুটির কথা আমরা জানতে পেরেছি, তার প্রত্যেকটি অভিযোগেরই তদন্ত করে দেখেছি। ত্রুটিযুক্ত থাকায় খুলনা সিটি নির্বাচনে তিনটি কেন্দ্রের নির্বাচন বাতিল করে দিয়েছে কমিশন। এসব অভিযোগ তদন্তে নির্বাচন কমিশন গঠিত কমিটি খুলনায় গিয়ে তদন্ত করছে।
ইসি কমিশনার রফিকুল বলেন, রংপুর সিটি নির্বাচনকে সবাই ভালো নির্বাচন বললেও আমরা তা দাবি করিনি। সেখানে পুলিশের বিরুদ্ধে গোলাগুলির অভিযোগ ছিল এবং আমরা তা তদন্ত করেছি। সহিংসতা কমাতে পরবর্তী নির্বাচনগুলোয় আমরা বিজিবি মোতায়েন করেছি। পুলিশের সংখ্যাও বাড়িয়েছি।
গত ১৫ মে খুলনা সিটি নির্বাচনে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে যে প্রশ্ন উঠেছে সে সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে রফিকুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন ছাড়া অন্য কোনো প্রক্রিয়ায় পুলিশ আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে না। পুলিশ নির্বাচনী বুথের ভেতরেও অবস্থান করে না। বাইরে থেকে তারা দায়িত্ব পালন করে। নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলো বিশেষত ২৮টি সংস্থার জোট ইলেকশন ওয়ার্কি গ্রুপ (ইডব্লিউজি) নির্বাচনে যে ১৩১টি ত্রুটির উল্লেখ করেছে, তার সত্যতা পাওয়া যায়নি বলে দাবি করেন তিনি। খুলনা সিটি নির্বাচন সম্পর্কে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজনের অভিযোগও নাকচ করে দেন এই নির্বাচন কমিশনার।
আসন্ন গাজীপুর সিটি নির্বাচন নিয়ে সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সাংবিধানিক সংস্থাটি খুলনার নির্বাচনে যেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেছে, সেসব কাটিয়ে উঠে গাজীপুরের জন্য কাজ করতে হবে। তার মতে, খুলনা সিটি নির্বাচনে বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল, সেসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে সতর্ক থাকতে হবে। খুলনার ব্যর্থতা যেন গাজীপুরে না ঘটে তা নিশ্চিতে এখন থেকে কাজ শুরুর পরামর্শও দেন বদিউল আলম মজুমদার।
সুজনের নির্বাহী সদস্য ড. তোফায়েল আহমেদ মনে করেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মিডিয়ার জোরালো ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, মিডিয়ার ভূমিকা নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। পর্যবেক্ষকদের ভূমিকাও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহায়ক।
আগামী ২৬ জুন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠানে তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন