দেড় লাখ টাকা ছিনতাই করলো বানর
ভারতের আগ্রার ব্যবসায়ী বিজয় বানসাল মেয়েকে নিয়ে সবে ব্যাঙ্কে ঢুকতে যাচ্ছিলেন। মেয়ের হাতে ছিল একটা পলিথিন ব্যাগ, তার ভেতরে প্রায় দু’লাখ টাকা। সিঁড়ি বেয়ে দোতলায় উঠতেই মেয়ের হাত থেকে টাকা ভর্তি ব্যাগটি ছিনিয়ে নিয়ে দৌড় দেয় চোর। কয়েক সেকেন্ডের বিহ্বলতা কাটিয়ে উঠে বাবা ও মেয়ে তাড়া করলেন চোরকে।
চেঁচামেচিতে ততক্ষণে বেরিয়ে এসেছেন ব্যাঙ্কের নিরাপত্তা কর্মীরাও। কিন্তু চোর ততক্ষণে টাকার ব্যাগ নিয়ে ওপরের তলায় পৌঁছে গেছে। তাকে তাড়া করা হচ্ছে বুঝে সে ব্যাগটি ছিঁড়ে ফেলে অনেকগুলো নোট ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেয়।
বানসাল একতলায় নেমে এসে সেগুলো কুড়িয়ে নিয়ে গুনে দেখলেন প্রায় ৬০ হাজার টাকা। অর্থাৎ ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা নিয়ে হাওয়া হয়েছে সেই লুটেরা।
পুলিশও খবর পেয়ে হাজির হল, কিন্তু তারা যে কোন আইনে এই লুটের ঘটনার মামলা দায়ের করবে, তা বুঝে উঠতে পারেনি। কারণ ওই ছিনতাইকারী তো আর মানুষ নয়। সে একটি বানর।
বিজয় বানসাল বলছেন, গোটা ঘটনা এত দ্রুত ঘটে গেল, যে কিছুই করতে পারলাম না। সারাজীবনের সঞ্চয় ছিল ওই টাকাটা। এখন তো আমি সর্বস্বান্ত হয়ে গেলাম।
দু’দিন আগে ওই বানর লুটেরার হামলা হলেও স্থানীয় পুলিশ শুধু ঘটনাটি লিখে রেখেছে। কারণ এই লেজওয়ালা চোরের বিরুদ্ধে কোন ধারায় মামলা করা হবে, তা বুঝে উঠতে পারছে না তারা।
বানসাল সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছেও আর্জি জানিয়েছেন যদি কিছু ব্যবস্থা করা যায়। উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন অঞ্চলেই বানরের উৎপাত রয়েছে ভয়াবহ রকমের।
বিশেষ করে বারানসি বা মথুরা-বৃন্দাবনের মতো হিন্দু তীর্থক্ষেত্রগুলিতে হাজার হাজার বানর সেখানকার তীর্থযাত্রী আর নাগরিকদের জীবন একরকম অতিষ্ঠ করে তোলে। ২০১৪ সালে মথুরায় গিয়েছিলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জী। সেখানকার বানরদের আবার বিশেষ নজর মানুষের চশমার ওপরে। প্রথমে নিরাপত্তার বাহিনী ভেবেছিল মুখার্জীকে চশমা না পড়তেই অনুরোধ করা হবে।
পরে অবশ্য রাষ্ট্রপতির ওপরে বানর বাহিনীর সম্ভাব্য হামলা আটকাতে নিয়োগ করা হয়েছিল প্রশিক্ষিত হনুমান বাহিনী। উত্তর প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে মেরঠ অঞ্চলের প্রায় ২৫০০ ভোটযন্ত্র রাখা হয়েছিল এক পরিত্যক্ত কাপড় মিলের স্ট্রং-রুমে।
ওই পরিত্যক্ত কাপড়-মিলে কয়েকশো বানরের বসবাস। তারা ভোট যন্ত্রগুলো নষ্ট করে দিতে পারে, এই আশঙ্কায় প্রশিক্ষিত হনুমানদের বিশেষভাবে পাহারা দেয়ার জন্য রাখা হয়েছিল সেখানে।
বারানসি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নির্বাচনী এলাকা। সেখানকার সব গ্রামকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে যুক্ত করার পরিকল্পনা নিয়েছিল সরকার। কিন্তু ইন্টারনেট সংযোগের জন্য প্রয়োজনীয় ফাইবার অপটিক কেবল দাঁত দিয়ে কেটে দিচ্ছিল বানরের দল।
ভারতে ব্রজভূমি বলে পরিচিত মথুরা-বৃন্দাবনে বানরের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে গণ-হারে তাদের ‘খোজা’ করা বা প্রজনন ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন মথুরার এমপি ও বলিউডের সাবেক গ্ল্যামার-কুইন হেমা মালিনী।
তবে উত্তরপ্রদেশের বাইরে ওড়িশা রাজ্যে সম্প্রতি একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটিয়েছে একটি বানর। বাড়িতে ঢুকে একটি শিশুকে ‘ছিনতাই’ করে নিয়ে যায় একটি বানর। পরে ওই শিশুটির মৃতদেহ পাওয়া গেছে একটি কুয়ার ভেতরে। -বিবিসি বাংলা
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন