রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মিয়ানমার প্রস্তুত : চীন

সহিংসতার শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে মিয়ানমার ফেরত নিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। শুক্রবার তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীকে এই তথ্য জানিয়েছেন। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।

বৃহস্পতিবার চীনের রাজধানী বেইজিং-এ মিয়ানমারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিউ তিনের সঙ্গে বৈঠক করেন ওয়াং ই। মিয়ানমার কিভাবে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করার চেষ্টা করছে তার একটি প্রতিবেদন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে পড়ে শোনান কিউ তিন।

চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে মনে করছি, বাংলাদেশে প্রবেশ করা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরত নিতে মিয়ানমার ইতোমধ্যে প্রস্তুতি নিয়েছে।’ বাংলাদেশের সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী।

ওয়াং আরো বলেছেন, ‘আমরা সত্যিই আশা করছি প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হবে। বিশেষ করে প্রথম দফায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের একটি দল খুব দ্রুত মিয়ানমারে ফেরত যাবেন।’

চীন এ ক্ষেত্রে সহযোগিতা এবং গঠনমূলক ভূমিকা পালন করবে। ইতোমধ্যে যেসব রোহিঙ্গা মিয়ানমারে ফিরবে তাদের জন্য ঘর তৈরি করে দিয়েছে চীন। তাছাড়া বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের জন্য তাঁবু ও অন্যান্য মানবিক সহযোগিতা প্রদান করেছে বলে ওয়াং ই জানান।

চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আশা করছি, বাংলাদেশ-মিয়ানমারের কঠোর পরিশ্রম করলে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া খুব্র দ্রুত শুরু হবে।’

চীনের সঙ্গে মিয়ানমারের খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। গত বছরের আগস্টে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর কথিত জঙ্গি অভিযানের নামে মিয়ানমার সেনারা যে জাতিগত নিধন চালিয়েছে তাতে সমর্থন ছিল চীনের।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তিনি রোহিঙ্গাদের বিষয়ে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বিস্তারিত কথা বলবেন।

তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গারা যাতে তাদের নিজেদের ভূমিতে ফিরে যেতে পারে রাখাইনে তার সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য চীনের সহযোগিতা চেয়েছি আমরা। চীন এ ব্যাপারে আমাদের সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছে। আমি মনে করছি, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে কিভাবে কাজ করা যায়- তার জন্য আমরা চীনের কাছ থেকে চমৎকার সহযোগিতা পাচ্ছি।’

গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর নতুন করে সহিংস দমন-নিপীড়ন শুরু হয়। সহিংসতার মুখে বাংলাদেশে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে আসে।