লিবিয়া উপকূলে নৌকাডুবিতে শিশুসহ নিহত ১০০
উজ্জ্বল রঙের পোশাক পরা প্রাণহীন তিন শিশুর দেহ অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে সমুদ্র সৈকতে নেওয়া হলো—মনে হচ্ছে শিশুরা ঘুমিয়ে পড়েছে। তিন লোক তিন শিশুকে হাত প্রসারিত করে ধরে আছে। এক শিশুর পায়ে স্নিকার, আরেকজনের পায়ে লাল মোজা, সাদা ফোঁটাযুক্ত প্যান্ট পরা, তৃতীয়জনের খালি পা, অতিরিক্ত কাপড় দিয়ে তার শরীর ঢেকে রাখা। গতকাল শুক্রবার লিবিয়ার উপকূলের এই চিত্র তুলে ধরেছে সিএনএন।
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) মুখপাত্র ক্রিস্টিন পিটার জানান, লিবিয়ার উপকূলে নৌযান ডুবির ঘটনায় ১০০ বা তার বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে ওই তিন শিশুও আছে। উন্নত জীবনের আশায় তারা সমুদ্র পাড়ি দিয়ে ইউরোপে যাচ্ছিল।
এ ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা অভিবাসন নিয়ে একটি চুক্তিতে সম্মতি জানান। এতে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে আরো শরণার্থীদের যেতে নিরুসাহিত করা হয়েছে।
আইওএমের তথ্য অনুযায়ী, ইউরোপের উদ্দেশে যাওয়ার সময় ভূমধ্যসাগরে নৌডুবিতে হাজারো মানুষ মারা গেছে।
শুক্রবার নৌডুবির পর মাত্র ১৪ জনকে উদ্ধার করত পেরেছে আইওএম। উদ্ধার কাজ এখনো চলছে।
আইওএমের মুখপাত্র ক্রিস্টিন পিটার সিএনএনকে বলেন, ‘পাঁচ বছরের কম বয়সী তিন শিশুর মৃতদেহ আমরা উদ্ধার করেছি। কতজন নিখোঁজ আছে বা মারা গেছে আমরা জানি না।’
আইওএম জানিয়েছে, ঘটনাস্থলে চিকিৎসকদের পাঠানো হয়েছে। মানবিক মানবিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
পৃথক ঘটনায় লিবিয়ার কোস্টগার্ড প্রায় ৩৪৫ জন অভিবাসীকে উপকূলে ফিরিয়ে নিয়ে গেছে। ২০১৮ সালে প্রায় ১০ হাজার ২০০ জনকে লিবিয়ায় ফিরিয়ে নেওয়া হয়। তারা সবাই সাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপ যাচ্ছিল।
চিকিৎসা সহায়তাকারী সংগঠন ডক্টর উইদাউট বর্ডারস জানিয়েছে, অনুসন্ধান ও উদ্ধার কার্যক্রম চালানোর প্রতিশ্র্রতি দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতাদের কিছু মৌলিক শিষ্টতা দেখাতে হবে। সাগরে যারা সমস্যায় আছে তাদের উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিতে হবে, লিবিয়ায় নয়।
সংগঠনটি জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলা বিষয়ক প্রধান কার্লিন ক্লেইয়ার বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যরা তাদের জীবন বাঁচানোর দায়িত্ব অস্বীকার করছেন।
স্পেনভিত্তিক বেসরকারি সংস্থা প্রোঅ্যাক্টিভা ওপেন আর্মসের প্রেসিডেন্ট অস্কার ক্যাম্পস বলেন, ইতালির কোস্টগার্ড তাদের সংস্থার উদ্ধারকারী নৌযান নিতে ডাকেনি। তিনি বলেন, ‘আজ (শুক্রবার) ১০০ মানুষ মারা গেছে। আমরা ক্ষুব্ধ, কেবল মৃত্যুর কারণে নয়, উদ্ধারকারী নৌযান তারা ব্যবহার করেনি সেই কারণেও। ওপেন আর্মস এখানে অনেক দিন ধরেই আছে। এখন পর্যন্ত ইতালি ইতালি বা অন্য কেউ আমাদের সামর্থ্যের ব্যবহার করেনি।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন