‘আন্টি শান্ত হোন, ৫ সহস্রাধিক ক্যামেরা আছে’
বিশ্বকাপ মঞ্চে ফ্রান্স প্রেসিডেন্ট এমানুল মেক্রোর সঙ্গে ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট গ্রাবার কিতরোভিচের আচরণকে নানা দৃষ্টিকোণ থেকে দেখছে বিশ্ববাসী। সোশ্যাল মিডিয়ায় এ নিয়ে নানা হাস্যরসও তৈরি হয়েছে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কিতরোভিচের বিশেষ দৃশ্য আপলোড দিয়ে লুগিও রিবা নামের এক অনলাইন এক্টিভিস্ট লেখেন, ‘আন্টি শান্ত হোন, এখানে কিন্তু ৫ সহস্রাধিক ক্যামেরা আছে।’
অনেকে লেখেছেন, কিউট কাপল বা সুখী দম্পতি।
কেউ কেউ আবার ফ্রান্স-ক্রোয়েশিয়ার বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরো জোরদার হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন।
ডেইলি মেইল লিখেছে, দুই প্রেসিডেন্টের এমন রসায়নে ম্যাক্রোর ৬৫ বছর বয়সী স্ত্রী ব্রিজিত্যি ক্ষুব্ধ হয়েছেন। যদিও তিনি তার রাগের বিষয়টি কারো কাছে প্রকাশ করেননি।
প্রসঙ্গত, ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট খেলা দেখেছেন তার দেশের ফুটবল দলের লাল সাদা জার্সি পরিধান করে। স্বাগতিক দেশ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যেখানে বৃষ্টিতে ছাতার নিচে অবস্থান নিয়েছেন অন্যদিকে আমন্ত্রিত অতিথিরা বৃষ্টিতে ভিজে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ খেলোয়াড়াদের মেডেল দিয়েছেন, এটি দেখতে অসৌজন্যমূলক হলেও দুই প্রেসিডেন্টের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ যেনো অন্য কথা বলছিল।
এ নিয়ে ক্রোয়েশিয়ার একজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মন্তব্য করেছেন, ‘মুষলধারে বৃষ্টির সময় ছাতার নিচে না গিয়ে খোলা আকাশের নিচে কিতোরোভিচের (ক্রোয়েশিয়ার নারী প্রেসিডেন্ট) যেভাবে একে একে প্রত্যেক খেলোয়াড়কে জড়িয়ে ধরেছেন সে দৃশ্য এই বিশ্বকাপের সেরা। ক্রোয়েশিয়া হেরে যেতে পারে কিন্তু তাদের খাঁটি আবেগ ও উষ্ণতায় মুগ্ধতা ছড়িয়েছে। এখানে কোনো রাজনীতি নেই, শুধুই খেলাধুলা। দুই দলকেই অভিনন্দন।’
একজন মন্তব্য করেছেন একজন ক্রোয়েশিয়ার হৃদয়ভাঙা প্রেসিডেন্ট যখন একে একে সব খেলোয়াড়দের যখন জড়িয়ে ধরেছেন তখন মনে হচ্ছিল তিনি খুব আনন্দিত। আরেকজনের মন্তব্য, তিনি আবেগের চেয়েও বেশি কিছু করেছেন।
আরেকজনের মন্তব্য, বিশ্বকাপ মঞ্চ থেকে ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট যখন বের হয়ে যাচ্ছিলেন তখন মনে হয়েছে তিনি বিজয়ী হয়েছেন। ফুটবল জার্সি, বৃষ্টি, কান্না, এলোমেলো চুল কিছুই তার কাছে বেমানান লাগছে না।
নিউজ এশিয়া লিখেছে, যখন তিনি খেলোয়াড়দের জড়িয়ে ধরেছিলেন তখন তাকে খেলোয়াড়সুলভ আচরণের বাইরে অন্য এক মানুষের মতো মনে হয়েছিল। বিশেষ করে বিশ্বকাপ ফাইনালে পরাজিত হওয়ার পর এমন বডি ল্যাঙ্গুয়েজ সত্যিকারের আবেগ ছাড়া সম্ভব নয়।
সোমবার ক্রোয়েশিয়ার রাজধানী জাগারিবে প্রত্যেক খেলোয়াড়কে বীরত্বের পুরস্কার দেয়া হবে। ক্রোয়েশিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অর্জন বিশ্বকাপের রানার্স হওয়ার আনন্দে মাতোয়ারা হবে দেশবাসী। ২০ বছর আগে ১৯৯৮ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলে দেশটি তৃতীয় স্থান অর্জন করেছিল।
কে এই নারী?
১৯৬৮ সালের ২৯ এপ্রিল ক্রোয়েশিয়ার রিজিকা এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন কোলিন্দা গ্রাবার। ওই সময় যুগোস্লাভিয়ার অধীনে ছিল ক্রোয়েশিয়া। ১৯৯৬ সালে তিনি জ্যাকব কিতারভিচ নামের একজনকে বিয়ে করেন। ৫০ বছর বয়সী এ নারী দুই সন্তানের জননী। এক ছেলে ও এক মেয়ের মা কোলিন্দা গ্রাবার- কিতারোভিচ। তাদের বড় মেয়ে ক্যাটরিনার বয়স ১৭ বছর। আর ২০০৩ সালে তাদের সংসারে জন্ম নেয় পুত্র সন্তান লোকা। ২০১৫ সালে ক্রোয়েশিয়ার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন কোলিন্দা গ্রাবার- কিতারোভিচ।
ব্যক্তিগত জীবনে খৃষ্টানধর্মাবলম্বী কোলিন্দা গ্রাবার সমকামীদের বিয়ের পক্ষে তার দেশে আইন জারি করেছেন। মিডিয়ায় তিনি এ নিয়ে প্রকাশ্যে বলেছেন, আমার ছেলেও যদি সমকামী হয় তবে আমি তাকে সাধুবাদ জানাব।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন