গুলশান হামলার চার্জশিট থেকে হাসনাতকে অব্যাহতি
গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার মামলায় আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে পুলিশ। তবে এই চার্জশিটে নাম নেই হামলার পর আলোচনায় থাকা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক হাসনাত রেজা করিমের। তদন্তে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কোনোভাবেই তার সম্পৃক্ততা পায়নি পুলিশ।
সোমবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে ২১ জনের সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলেছে। তাদের মধ্যে ১৩ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন অভিযানে নিহত হয়েছেন। বাকি আটজনকে চার্জশিটে সরাসরি অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে এখন ৬ জন কারাগারে রয়েছেন। আর দু’জন পলাতক।’
তিনি জানান, জীবিত যাদের নাম দিয়ে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে, তারা হলেন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী, রাকিবুল হাসান রিগান, রাশেদুল ইসলাম ওরফে র্যা শ, সোহেল মাহফুজ, মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, হাদিসুর রহমান সাগর, পলাতক মামুনুর রশিদ রিপন ও শহীদুল ইসলাম খালেদ।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাত নয়টায় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের হাতে গুলশানের স্প্যানিশ রেস্টুরেন্ট হলি আর্টিজান আক্রান্ত হয়। হামলায় দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ দেশি-বিদেশি ২২ নাগরিক নিহত হন।
প্রায় ১২ ঘণ্টার ‘জিম্মি সংকট’ শেষ হয় সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযান ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’ দিয়ে।
অভিযান শেষে আক্রান্ত হোটেল থেকে উদ্ধার করা হয় হাসনাত করিম, তাহমিদ হাসিব খানসহ ৩২ জনকে। পরে হাসনাত করিম জানান, ১৩ বছর বয়সী সন্তান রাইয়ান করিমের জন্মদিন উদযাপন করতেই ওইদিন সন্ধ্যায় স্ত্রী শারমিন পারভীন ও কনিষ্ঠ সন্তান সাফা করিমকে নিয়ে হলি আর্টিজানে গিয়েছিলেন।
তবে হলি আর্টিজানে জিম্মিদশার বিভিন্ন ফাঁস হওয়া ভিডিও চিত্রে হাসনাত করিমকে রহস্যজনকভাবে চলাফেরা করতে দেখা যায়। রহস্যজনক আচরণের কারণে তাদের গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
২০১৬ সালের ৩ আগস্ট রাতে হাসনাত করিমকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিন তাদের ৮ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। ১৩ আগস্ট গুলশান হামলার মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
২৪ আগস্ট গুলশান হামলা মামলায় গ্রেফতার হাসনাত করিমের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। হাসনাত করিম বর্তমানে কাশিমপুর কারাগারে রয়েছেন।
হাসনাত করিমের বাবা মোহাম্মদ রেজাউল করিম। হাসনাত বাংলাদেশ ও ব্রিটেনের দ্বৈত নাগরিক। ব্রিটেনের নাগরিক হলেও সম্প্রতি তিনি দেশে ফিরে এসে বাবার আর্কিটেক্ট ফার্মে পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছিলেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন