২০০ কোটি টাকার কয়লা গায়েব : দুদক

প্রাথমিক তদন্তে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া খনির ইয়ার্ডে এক লাখ ৪৪ হাজার টন কয়লার ঘাটতি পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর তদন্ত দল। গায়েব হয়ে যাওয়া এই কয়লার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ২০০ কোটি টাকা।

সোমবার (২৩ জুলাই) খনি পরিদর্শন শেষে দিনাজপুর দুদক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক বেনজীর আহমেদ বলেন, কয়লার মজুদ সংক্রান্ত কাগজপত্রে দেখলাম এক লাখ ৪৬ হাজার টন কয়লা মজুদ থাকার কথা। কিন্তু ইয়ার্ডে মজুদ দেখলাম প্রায় দুই হাজার টন। সেখানে এক লাখ ৪৪ হাজার টন কয়লার ঘাটতি রয়েছে।

সোমবার গঠিত কমিশনের অনুসন্ধান টিমকে আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

কয়লা সরবরাহ না পাওয়ায় বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন রোববার (২২ জুলাই) রাত থেকে বন্ধ হয়ে গেছে। এ কারণে রংপুর বিভাগের আট জেলা বিদ্যুৎ সংকট তৈরি হয়েছে।

জানা গেছে, সম্প্রতি কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া খনি থেকে উত্তোলন করে রাখা ১ লাখ ৪৬ হাজার টন কয়লা ‘গায়েব’হওয়ার দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ পায়। এ সব প্রতিবেদন আমলে নিয়ে কমিশন সোমবার (২৩ জুলাই) বিশেষ বৈঠক করে। বৈঠকে এ দুর্নীতি অনুসন্ধানের জন্য দুদকের উপ-পরিচালক শামসুল আলমের নেতৃত্বে একটি অনুসন্ধান টিম গঠন করে। এই টিমের সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় দুদকের সহকারী পরিচালক এ এস এম সাজ্জাদ হোসেন ও উপ-সহকারী পরিচালক এ এস এম তাজুল ইসলামকে। অনুসন্ধান টিমের তদারকির দায়িত্ব দেয়া হয় দুদকের পরিচালক কাজী শফিকুল আলমকে।

এদিকে দুদকের দিনাজপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক বেনজির আহমেদের নেতৃত্বে একটি বিশেষ টিম সোমবার (২৩ জুলাই) বিকেলে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে বিশেষ অভিযান চালায়। এ সময় তারা কয়লার এ দুর্নীতির ব্যাপারে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে এবং কয়লা দুর্নীতির প্রমাণ পায়।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, ক্ষমতার অপব্যবহার, জালিয়াতি, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে প্রায় ১ লাখ ১৬ হাজার টন কয়লা খোলা বাজারে বিক্রি করা হয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য ২০০ কোটি টাকা। বড় পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবীব উদ্দিন আহমদ ও অন্যদের বিরুদ্ধে এ টাকা আত্মসাতের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে। অপরদিকে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি প্রকল্পের কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে কয়লা খনির শীর্ষ পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিয়েছে।

এদিকে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল হাকিম সরকার জানিয়েছেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রটি আগামী এক মাসের মধ্যে উৎপাদনে যেতে পারবে।