ইমরান খানের প্রধানমন্ত্রী হওয়া এখন অনিশ্চিত!
পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টির (পিটিআই) প্রধান ইমরান খান দেশটির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়। আচরণবিধি ভঙ্গের কারণে তাঁর জয়লাভ করা পাঁচটি আসনেরই ফল পাকিস্তান নির্বাচন কমিশন (ইসিপি) বাতিল করে দিতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় পার্লামেন্ট মেম্বার হিসেবে শপথ গ্রহণের জন্য তাঁকে শর্ত সাপেক্ষে অনুমতি দিয়েছে ইসিপি।
গত মঙ্গলবার ইসিপি শর্ত সাপেক্ষে সাবেক ক্রিকেটার ও পিটিআইপ্রধান ইমরান খানকে জাতীয় পরিষদের সদস্য হিসেবে শপথ গ্রহণের অনুমতি দিয়েছে। তাঁর জয়লাভ করা পাঁচটি আসনের মধ্যে দুটি আসনের ভোটের ফল ঘোষণা স্থগিত করা হলেও বিজয়ী ঘোষণা করা তিনটি আসনের মধ্যে একটি আসনের সদস্য হিসেবে তিনি শপথ নিতে পারবেন। তবে ইসিপির শর্ত হচ্ছে, তাঁর বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ নিষ্পত্তির ওপর তাঁর শপথ নির্ভর করবে। ফলে বিজয়ী দলের প্রধান হিসেবে ইমরান খান পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন কি না, তা এখনো পরিষ্কার নয়।
আইন অনুযাযী, বিজয়ী ঘোষণা করা এবং সরকারি গেজেটে প্রকাশিত কোনো প্রার্থীই শুধু জাতীয় পরিষদের সদস্য হিসেবে শপথ নিতে পারেন। এরই মধ্যে তাঁর দল তাঁকে মনোনয়ন দেওয়ায় তিনি পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার অপেক্ষায় আছেন।
নির্বাচন কমিশন ইমরান খানের জাতীয় পরিষদের ৫৩ নম্বর (ইসলামাবাদ-২) আসন ও জাতীয় পরিষদের ১৩১ নম্বর (লাহের-৯) আসনে জয়লাভের ফল স্থগিত রেখেছে। এর মধ্যে লাহোরের আসনটির ফল লাহোর হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিত করে ইসিপি। আর ইসলামাবাদের আসনে ইমরান খান ভোটের দিন গোপনীয়তা লঙ্ঘন করে প্রকাশ্যে টিভি ক্যামেরার সামনে ব্যালট পেপারে সিল দেন। এতে নির্বাচন আচরণবিধির গুরুতর লঙ্ঘনের অভিযোগে ওই আসনটির ফল স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। তবে সর্বশেষ খবরে ডন জানায়, পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট গতকাল বুধবার লাহোর আসনটির ভোট পুনর্গননা ও ফল স্থগিত রাখার বিষয়ে লাহোর হাইকোর্টের আদেশ খারিজ করে দিয়েছেন।
এ ছাড়া ইসিপি ইমরান খানকে জাতীয় পরিষদের ৩৫ নম্বর (বান্নু) আসন, জাতীয় পরিষদের ৯৫ নম্বর (মিয়ানওয়ালি) আসন ও জাতীয় পরিষদের ২৪৩ নম্বর (করাচি) আসনে বিজয়ী ঘোষণা করে। কিন্তু নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁর সব কয়টি আসনের ফল বাতিল করতে পারে নির্বাচন কমিশন। ভোটের দিন প্রকাশ্যে ভোট দেওয়া ছাড়াও নির্বাচনী প্রচারাভিযানের সময় অসংগত ভাষা ব্যবহারের কারণে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগও রয়েছে ইমরান খানের বিরুদ্ধে। এখন এসব অভিযোগের ফয়সালা যদি ইমরান খানের বিরুদ্ধে যায়, তাহেল তিনি জয়লাভ করা সব কয়টি আসনে আযোগ্য ঘোষিত হবেন।
এর আগে পাকিস্তানের বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, নির্বাচন কমিশন প্রথমে ইমরান খানের জয়লাভ করা পাঁচটি আসনের ফলই স্থগিত ঘোষণা করেছিল। পরে এটি সংশোধন করে তাঁর দুটি আসনের ফল স্থগিত করা হয়। পিটিআই থেকে ইমরান খানকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়ার এক দিন পর এই সিদ্ধান্তের কথা জানাল ইসিপি। আশা করা হচ্ছে, আগামী ১৪ অথবা ১৫ আগস্ট তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন। সূত্র : পিটিআই, টাইমস অব ইন্ডিয়া ও ডন ডটকম।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন