যেভাবে ক্রিকেট কিংবদন্তি থেকে প্রধানমন্ত্রীর গদিতে ইমরান

ক্রিকেট কিংবদন্তি থেকে প্রধানমন্ত্রী হয়ে ইতিহাস রচনা করেছেন ইমরান খান। বিশ্বের প্রথম কোনো ক্রিকেটার হিসেবে ইতিমধ্যে একটি স্বাধীন দেশের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন তিনি। গেল ১৮ আগস্ট শপথগ্রহণের মধ্য দিয়ে তার এ যাত্রা শুরু হয়।

তবে ইমরান খানের ব্যাকগ্রাউন্ড রাজনীতির নয়। কোনো রাজনৈতিক পরিবার থেকে উঠে আসেননি তিনি। আত্মীয়স্বজনও রাজনীতিঘেঁষা ছিলেন না কিংবা নয়। ক্ষমতায় আরোহনের আগে পুরোদস্তুর ড্যাশিং ক্রিকেট সুপারস্টার ছিলেন ৬৫ বছর বয়সী প্রধানমন্ত্রী।

ক্রিকেট মাঠে ইমরান খান ছিলেন লড়াকু সৈনিক। হার বলে কোনো শব্দ তার অভিধানে ছিল না। ইনিংসের শেষ বল পর্যন্ত দলবল নিয়ে লড়ে যেতেন তিনি। তার নেতৃত্বে ১৯৯২ সালে বিশ্বকাপ জেতে পাকিস্তান, যা এখনও দেশটির সর্বোচ্চ শিরোপা জয়।

ফাইনালি লড়াইয়ে ইংল্যান্ডকে পরাভূত করে সোনালি ট্রফিতে চুমু আঁকে পাকিস্তান। এর পর বৈশ্বিক তারকা বনে যান ইমরান। বিশ্ব জয়ের পর সেই ইংল্যান্ডেই বসতি গাড়েন তিনি। যেখানে তার জনপ্রিয়তা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং ব্যাচেলর হিসেবে পরিচিতি পান। একপর্যায়ে জেমিমা গোল্ডস্মিথকে বিয়ে করে গা থেকে সেই তকমা খসান।

পুনরায় দেশে ফেরেন ইমরান খান। ছেঁটে ফেলেন প্লেবয় ইমেজ। শুরু করেন রাজনৈতিক ক্যারিয়ার। দুর্নীতি বিরোধী স্লোগানে ১৯৯৬ সালের এপ্রিলে প্রতিষ্ঠা করেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ। পরে জেমিমার সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় তার। তাদের ঘরে দুই সন্তান আছে। এরপর রাজনীতির প্রতি একদম ঝুঁকে পড়েন। অবশ্য নারী ছাড়া থাকতে পারেননি তিনি। ২০১৪ সালে গাঁটছড়া বাঁধেন বিবিসি আবহাওয়া উপস্থাপিকা রেহাম খানের সঙ্গে। কিন্তু সেই বন্ধন বেশিদিন টেকেনি। বছরখানেক অতিক্রম না হতেই ছিঁড়ে যায়। এর মাঝে প্রতিপক্ষদের গ্যাঁড়াকলে পড়ে নাজেহাল হতে হয়।

এতদ সত্ত্বেও রাজনীতির মাঠ থেকে সরেননি ইমরান খান। সব অন্যায়-অবিচার, অনাচার, দুর্নীতির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেন। প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হতে পারলে সব দুরীভূত করবেন তিনি। এর ফাঁকে বিয়ে করেন পীর বংশীয় নারী বুশরা মনিকাকে, যা তাকে প্রধানমন্ত্রী হতে সহায়তা করে।

গদিতে উঠলেও কলঙ্ক লেগে আছে ইমরান খানের গায়ে। অনেকে বলছেন, সামরিক বাহিনীর সহায়তা নিয়ে সিংহাসনে বসেছেন তিনি।

তবে তা অস্বীকার করেছেন ইমরান। পাশাপাশি দেশ থেকে সব অনিয়ম, ক্রিকেটের হারানো ঐতিহ্য, গৌরব ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এখন দেখার বিষয়, স্বপ্ন বাস্তবায়নে কতদূর এগোতে পারেন ২২ গজের ক্যাপ্টেন।