৮৬ দিন পর বড়পুকুরিয়া খনিতে কয়লা উত্তোলন শুরু
নির্ধারিত সময়ের দুদিন আগেই শনিবার থেকে শুরু হয়েছে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির কয়লা উত্তোলন।
টানা প্রায় তিন মাস (৮৬ দিন) বন্ধ থাকার পর শুরু হল এই কয়লা উত্তোলন। তবে পুরোদমে নয়, কয়লা উত্তোলন শুরু হয়েছে পরীক্ষামূলকভাবে।
খনির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফজলুর রহমান জানান, খনির ১৩১৪ নম্বর ফেসের টানেল নির্মাণের কাজ শেষ করার পর শুক্রবার দিনগত মধ্যরাত থেকে উত্তোলন শুরু হয়েছে।
আগামী ২/১ দিনের মধ্যেই দৈনিক দুই হাজার থেকে ২২শ’ টন কয়লা উত্তোলন হবে বলে জানান তিনি।
এর আগে গত বুধবার ফজলুর রহমান জানান, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ১০ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে কয়লা উত্তোলন।
কিন্তু কয়লা কার্টিং মেশিনসহ আনুসাঙ্গিক যন্ত্রপাতি স্থাপন সম্ভব হওয়ায় নির্ধারিত সময়ের দুদিন আগেই নতুন ফেস থেকে এই কয়লা উত্তোলন শুরু হল।
এদিকে কয়লা উত্তোলন শুরু হলেও এ ব্যাপারে কিছু জানে না বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ। তাই কবে নাগাদ তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন শুরু হবে এ ব্যাপারে কিছুই জানাতে পারেননি কর্তৃপক্ষ।
বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল হাকিম সরকার বলেন, ‘কয়লা উত্তোলন শুরু হয়েছে কিনা এ ব্যাপারে আমাদেরকে কিছুই জানানো হয়নি। আমি কিছু জানতে পারিনি।’
এর আগে গত ১৫ জুন খনির উৎপাদনশীল ১২১০ নম্বর কোল ফেসের উৎপাদনযোগ্য কয়লার মজুদ শেষ হয়ে যাওয়ায় ১৬ জুন থেকে খনির কয়লা উত্তোলন বন্ধ হয়ে যায়।
একই সময় খনির কোল ইয়ার্ড ও কয়লাভিত্তিক ৫২৫ মেগাওয়াট বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লার মজুদ শূন্যের কোটায় নেমে আসে।
এতে কয়লার অভাবে গত ২২ জুলাই বড়পুকুরিয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। ফলে উত্তরাঞ্চলের ৮ জেলায় বিদ্যুতের ভয়াবহ লো-ভোল্টেজ ও লোডশেডিং সমস্যা প্রকট হয়ে ওঠে।
উল্লেখ্য, কয়লার অভাবে বড়পুকুরিয়া ৫২৫ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হওয়ার দ্বারপ্রান্ত উপনিত হলে ১৯ জুলাই খনির ইয়ার্ড থেকে প্রায় ২৩০ কোটি টাকার প্রায় এক লাখ ৪৫ হাজার টন কয়লা উধাও হওয়ার ঘটনাটি ধরা পড়ে।
এ ঘটনায় বড়পুকুরিয়া কয়লা কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএমসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহমদকে, মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) নুরুজ্জামান চৌধুরী ও উপমহাব্যবস্থাপক (স্টোর) খালেদুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
খনির কোম্পানি সচিব ও মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আবুল কাশেম প্রধানিয়াকে পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড সিরাজগঞ্জে বদলি করা হয়।
খনির এই চার উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাসহ ১৯ কর্মকর্তার নামে দুর্নীতি দমন আইনে ২৪ জুলাই পার্বতীপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন বিসিএমসিএলের ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আনিছুর রহমান।
মামলাটি তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ঢাকার উপপরিচালক শামসুল আলম। দুদক খনির সাবেক দুই ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. কামরুজ্জামান ও আমিনুজ্জামান এবং মামলায় অভিযুক্ত ১৯ কর্মকর্তাসহ ২১ কর্মকর্তার দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
গত ৩০ আগস্ট পর্যন্ত দুদক কয়লা খনির সাবেক ও বর্তমান ৩০ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন