কাদামাটিতে মরদেহের নিচে অলৌকিকভাবে বেঁচে ছিল এই শিশু

উহানের বয়স মাত্র একবছর। ২০ ফুটের উঁচু এক সুনামিতে বিলীন হয়ে গিয়েছিল সে। ২৪ ঘণ্টার পর কাদার মধ্যে দুইটি মরদেহের নিচ থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। ইন্দোনেশিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্প-পরবর্তী সুনামিতে এ অলৌকিক ঘটনাটি ঘটেছে।

নিখোঁজ মেয়েকে খুঁজে পেয়ে যারপরনাই খুশি উহানের মা। আবেগে আপ্লূত উহানের মা এনড্যাং বলেন, ‘ঈশ্বরকে ধন্যবাদ যে, আমি আমার মেয়েকে আবার ফিরে পেয়েছি। সে-ও নতুন জীবন পেয়েছে।’

শুক্রবার দেশটির সুলাওয়েসি দ্বীপে ভূমিকম্পের পর ভয়াবহ সুনামি আঘাত হানে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৫। সুনামির ফলে সৃষ্ট ছয় থেকে সাত ফুট উঁচু ঢেউ সুলাওয়েসির পালু শহরকে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ১৪০০ ছাড়িয়ে গেছে।

ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া পালু শহরের জন্য উহানকে ফিরে পাওয়া একটি সুখবর হলেও শহরটির ৭০ হাজারের বেশি লোকজন এখন গৃহহীন। হাজার হাজার শিশুকে থাকতে হচ্ছে খোলা আকাশের নিচে তাঁবুতে। পানি ও বিদ্যুতের জন্য চারদিকে হাহাকার। বাধ্য হয়ে নদীর দূষিত পানি পান করতে বাধ্য হচ্ছেন এ অঞ্চলের মানুষ। লণ্ডভণ্ড শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় সম্পূর্ণ অচল হয়ে পড়েছে।

তবে সন্তানকে ফিরে পাওয়ার আনন্দ থাকলেও দুশ্চিন্তা যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না এনড্যাংয়ের। হতাশাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমি জানি না আমাকে কোথায় যেতে হবে। একটু যে মাথা গুঁজবো, সে ব্যবস্থাও নেই। ঘরবাড়ি সবকিছু নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে সুনামি’।

যদিও প্রাথমিকভাবে সরকারের তরফ থেকে অন্যান্যদের মতো এনড্যাংয়ের কাছে ত্রাণ-সামগ্রী পৌঁছে দেয়া হয়েছে, তারপরও সামনের দিনগুলো কীভাবে কাটবে, সেই চিন্তায় নির্ঘম রাত কাটছে সন্তান ফিরে পাওয়া এই মায়ের।

তবে সব থেকে বড় বথা হলো তার যা পাওয়ার দরকার ছিল, তা তিনি পেয়েছেন। সেটা হলো তার হারিয়ে যাওয়া সন্তান। এ দুর্যোগের মধ্যে এটাই তার বড় প্রাপ্তি।

সূত্র: এমএসএন ডটকম