ট্রাম্পকে বিষ মেশানো চিঠি পাঠিয়ে হত্যার ষড়যন্ত্র

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বিষ-চিঠি পাঠিয়ে হত্যার ষড়যন্ত্র। গ্রেপ্তার প্রাক্তন এক মার্কিন নৌসেনা কর্মী। রেড়ির বীজ গুঁড়িয়ে যে মারাত্মক বিষ তৈরি হয়, যার সামান্যতম একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের শরীরে গেলে তৎক্ষণাৎ মৃত্যু হতে পারে, তা খামে ভরে পাঠিয়েছিলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে।

সেই সঙ্গে আমেরিকার ডিফেন্স সেক্রেটারি জিম ম্যাটিস, এফবিআই অধিকর্তা ক্রিস্টোফার রে এবং মার্কিন নৌবাহিনীর সর্বোচ্চ কর্তা অ্যাডাম জন রিচার্ডসনকেও ওই ধরনের চিঠি পাঠান ওই ব্যক্তি।

মজার ব্যাপার হল, যে খামে তিনি ওই চিঠি পাঠিয়েছিলেন, তাতে ফেরতের ঠিকানায় লিখে দিয়েছিলেন নিজের নাম ঠিকানাই। আর তা দেখেই ওই এই ব্যক্তিকে খুঁজে বের করে, তাকে গ্রেপ্তার করল এফবিআই।

শনিবার তাকে মার্কিন ডিস্ট্রিক্ট উটার আদালতে তোলা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে রাইসিনের মতো মারাত্মক বিষ দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ দায়ের হয়েছে। যা প্রমাণ হলে যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা হতে পারে। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম উইলিয়াম ক্লাইড অ্যালেন থ্রি। মার্কিন নৌবাহিনীর প্রাক্তন এই কর্মীর বয়স ৩৯।
এফবিআই তদন্তকারীদের অ্যালেন জানিয়েছেন, তিনি অনলাইন শপিং সংস্থা ইবে থেকে দীর্ঘদিন ধরে অল্প অল্প করে রেড়ির বীজ বা ক্যাস্টর সিড আনিয়েছেন। আর সেই বীজ গুঁড়িয়েই বিষাক্ত রাইসিন দেওয়া চিঠি পাঠিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট-সহ বিশিষ্টদের।

এমনকি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকেও তিনি ওই বিষ চিঠি পাঠিয়েছেন বলে স্বীকার
করেছেন তদন্তকারীদের কাছে। যদিও সেই চিঠি তাঁরা পেয়েছেন কি না তা জানা যায়নি। অ্যালেন আদৌ সত্যি বলছেন কি না তা-ও জানা যায়নি।

তদন্তকারীদের কাছে প্রশ্ন করা হয়েছিল, অ্যালেনের কি মানসিক সমস্যা আছে? সে কি মানসিক রোগে আক্রান্ত? উত্তরে তারা কিছু জানায়নি। যদিও বলেছে, বিষয়টি নেহাত ঠাট্টার নয়। তার কারণ, সেই রাইসিনের মতো বিষ পাঠিয়েছে তাও আবার প্রেসিডেন্টকে। এতে কারও কোনও ক্ষতি হয়নি ঠিকই তবে হতেও তো পারত।

চিঠির খামে অ্যালেন লিখে পাঠিয়েছিল, জ্যাক অ্যান্ড মিসাইল বিন স্টক পাওডার। তাঁর পাঠানো সেই চিঠির পরীক্ষা করে তাতে বিষ পাওয়াও গিয়েছে। এনিয়ে অ্যালেনকে প্রশ্ন করা হলে অবশ্য সে জানিয়েছে, প্রেসিডেন্টকে বিশেষ বার্তা দিতেই ওই চিঠি পাঠিয়েছিল সে, তবে কী সেই বার্তা তা স্পষ্ট করে কোথাও জানায়নি।

শুধু জানিয়েছে, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আতঙ্ক থেকেই ক্যাস্টর সিড জমা করা শুরু করেছিল সে। যাতে যখন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবে, তখন তার হাতেও কিছু অস্ত্র থাকে।

এখানেই তার পাগলামির শেষ নয় আদালতে নিজের বক্তব্য রাখতে রাখতে হঠাৎ করেই কেঁদে ফেলে অ্যালান।

বিচারককে সে জানায়, তাঁর স্ত্রী মেরুদণ্ডের রোগে শয্যাশায়ী। তাঁর দেখভালটুকুও তারই হাতে। একথা বলতে বলতে কেঁদেও ফেলে অ্যালেন।

পরক্ষণেই আবার পরিবারের উপস্থিত সদস্যদের দিকে তাকিয়ে একগাল হেসে বলেন, তিনি সেই দিনের অপেক্ষায় রয়েছেন, যেদিন যীশু খ্রিস্টের গির্জার সমস্ত সন্তরা একটি বৈঠক করবেন। সেদিনই সবার সুবিচার হবে।