বাড়িতে বেশি বই থাকলে বুদ্ধিমান হয় বাচ্চারা
প্রচুর বই নিয়ে সারাদিন বসে থাকে বলে কি বইয়ের দোকানদাররা বেশি বুদ্ধিমান হন? হয়ত সবসময় এমনটা ঘটে না, কিন্তু বাড়িতে প্রচুর বই থাকলে ছেলেমেয়েরা ধীমান হয়ে বেড়ে ওঠে, এমন প্রমাণ পেয়েছেন অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা।
অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এবং ইউনিভার্সিটি অফ নেভাডার গবেষকরা সম্প্রতি কোন দেশের মানুষের বাড়িতে সবচেয়ে বেশি বই তা বের করতে একটি গবেষণা চালান।
বেশি পরিমাণ বইয়ের মধ্যে বেড়ে উঠলে বাচ্চারা সেগুলো সব পড়ে না ফেললেও বড় হলে শিক্ষা-দীক্ষায় তারা উন্নত হয়, সমীক্ষার ফলাফলে দেখেন গবেষকরা।
এমাসে সোশ্যাল সাইন্স রিসার্চে গবেষণাপত্রটি প্রকাশ করা হয় বলে জানায় ব্রিটিশ পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ান।
গবেষণায় দেখা যায়, ১৬ বছর বয়সে একটি শিশুর বাসায় থাকা বইয়ের সংখ্যা ভবিষ্যতে তার উচ্চশিক্ষিত হবার সম্ভাবনাকে দারুণভাবে প্রভাবিত করে। বেশি বেশি বইয়ের মধ্যে বেড়ে উঠলে বাচ্চাদের উচ্চশিক্ষিত ও বুদ্ধিমান হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
এমনকি, গবেষণায় এও দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিধারী কিন্তু ছোটবেলায় বেশি বই দেখেনি এমন ব্যক্তিরা পাণ্ডিত্যে নয় বছর বয়সে স্কুল ছেড়েছেন কিন্তু কৈশোরে বাসায় প্রচুর বই দেখেছেন এমন ব্যক্তিদের সমান।
গবেষকরা জানান, ১৬ বছর বেশি পরিমাণ বইয়ের মধ্যে থাকলে তা মানুষের পাণ্ডিত্য, গাণিতিক দক্ষতা এবং প্রযুক্তি ব্যবহারের দক্ষতাকে উন্নত করে।
সারা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বই থাকে এস্তোনিয়ার মানুষের বাসায়। গড়ে সেখানে প্রত্যেকের বাড়িতে ২১৮টি বই রয়েছে। সেখানকার ৩৫ শতাংশ মানুষের বাসায় সাড়ে তিনশ’রও বেশি বই রয়েছে, জানান গবেষকরা।
এরপরেই গড়ে সবচেয়ে বেশি বই থাকে নরওয়ে (২১২টি), সুইডেন (২১০), এবং চেক রিপাবলিকের (২০৪) বাড়িতে। ব্রিটেনের বাড়িগুলোতে গড়ে ১৪৩টি এবং যুক্তরাষ্ট্রে ১১৪টি করে বই থাকে।
গবেষণাপত্রের মূল লেখিকা অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ড. জোয়ানা সিকোরা।
সিকোরা বলেন, ‘আমরা মনে করি মানুষ হয় ভাষা ব্যবহারে দক্ষ হয়, না হলে অংকে ভালো হয়। কিন্তু এই গবেষণায় সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র দেখা দেখা যাচ্ছে। এটা আমরা আশা করিনি।’
‘বিষয়টা এমন না যে, ছোট বেলায় বই পড়লে, আপনি বড় হয়েও শুধু বই পড়াতেই খুব ভালো করবেন। এরকম ব্যক্তিরা ডিজিটাল প্রযুক্তির মতো সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি ক্ষেত্রেও খুব ভালো করেন,’ যোগ করেন তিনি।
তবে সিকোরা জোর দিয়ে বলেন যে ছোট বেলায় বই পড়ার জন্যই যে উপকার পাওয়া যায় এমন না।
‘এটা ঠিক আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়া কঠিন। এর সঙ্গে আরও বিষয় জড়িত। বাবা-মা ও আশেপাশের অন্যান্যদেরকে বইয়ের মধ্যে থাকতে দেখাটা বাচ্চাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ,’ বলেন তিনি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন