খেত পান্তা ভাত, হয়ে গেল সাহেব : প্রধানমন্ত্রী
টেলিভিশনের টকশোতে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে অশালীন ভাষায় ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের আক্রমণের নিন্দা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, ‘এভাবে কোনো নারীকে অশালীন ভাষায় গালাগাল জঘন্য ও ন্যাক্কারজনক। তার বিরুদ্ধে মামলা হলে সরকার ব্যবস্থা নেবে।’
সোমবার বিকেলে সরকারি বাসভবন গণভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর সম্প্রতি সৌদি আরব সফর নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মাসুদা ভাট্টিকে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের বলা ‘চরিত্রহীন’ প্রসঙ্গে একাধিক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন।
জবাবে প্রধানমন্ত্রীও এই ইস্যুতে সাংবাদিক ও নারী সংগঠনের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেন। এ সময় তিনিও মইনুল হোসেনের ‘চরিত্রের’ ফিরিস্তি তুলে ধরেন।
মুক্তিযুদ্ধকালীন ও পরবর্তী সময়ে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের বিতর্কিত নানা ভূমিকার বর্ণনা দেন এবং প্রধানমন্ত্রীর ভাণ্ডারে আরো যেসব তথ্য আছে, তা পরে জানানোর কথা বলেন।
এক পর্যায়ে মইনুল হোসেনকে পাকিস্তানি হানাদারদের ‘দালাল’ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যে লোক কটূক্তি করলেন, তার বাচনভঙ্গি ও এটিচুড খারাপ। একাত্তরে তিনি হানাদারদের দালালি করতেন। জাতির পিতার আত্মস্বীকৃত খুনিদের নিয়ে তিনি রাজনৈতিক দলও গঠন করেছিলেন। তার কাছ থেকে জাতি ভাল ও ভদ্র ব্যবহার কীভাবে আশা করে?’
তিনি বলেন, ‘মইনুলের গুণের শেষ নাই। উনি গেসিলেন ব্যারিস্টারি করতে, মানিক কাকা (মইনুলের বাবা তোফাজ্জল হোসেন মাকিন মিয়া) পাঠালেন। ব্যারিস্টারি পাস করে আসার পর তিনি সাহেব হয়ে গেলেন। আগে পান্তা ভাত খেত, এখন কাকার ছেলে স্বাভাবিক খাবার খেতে পারেন না। সাহেবি খাবার খেতে হবে, ইংরেজি খাবার। এজন্য আলাদা বাবুর্চি রাখতে হবে। সেই সময় ১০০ টাকা দিয়ে ইংরেজি খাবারের জন্য বাবুর্চি রাখা হয়েছিল তার জন্য।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ইংরেজদের এই সাহেবি খাবারই খাওয়া শিকলেন মইনুল, কথা বলা, ভদ্রতার কিছুই শেখেন নাই। তার সম্পর্কে আরো অনেক কিছু জানি। এখন সব বলব না। পরে বলব।’
তিনি আরো বলেন, ‘এই লোকটিই এখন খুনি, দুর্নীতিবাজ, মানি লন্ডারিংয়ে জড়িত, জঙ্গিবাদ সৃষ্টিকারী, অগ্নি সন্ত্রাসীদের সঙ্গে জোট করেছেন। বর্তমানে সর্বক্ষেত্রে বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতা ভোগ করছেন। রাজনীতি করার স্বাধীনতা রয়েছে, জোট গঠনেরও। আমরা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে স্বাগত জানাই।’
একই সঙ্গে হুঁশিয়ারি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জোট করেছেন, নির্বাচনে আসেন অসুবিধা নাই। কিন্তু, এই জোটের নামে অরাজকতা সৃষ্টি করা হলে কোনো ছাড় দেয়া হবে না।’
সৌদি বাদশা ও দুটি পবিত্র মসজিদের খাদেম সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদের আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী গত ১৬ থেকে ১৯ অক্টোবর সৌদি আরবে সরকারি সফর করেন।
এ সফরে প্রধানমন্ত্রী রিয়াদের রাজপ্রাসাদে সৌদি বাদশার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তার সম্মানে আয়োজিত এক মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন।
প্রধানমন্ত্রী সৌদি যুবরাজ, উপ-প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোহাম্মাদ বিন সালমান বিন আব্দুল আজিজের সঙ্গে এক বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
শেখ হাসিনা মক্কা শরীফে পবিত্র ওমরাহ পালন এবং মদীনায় মসজিদে নববীতে মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর পবিত্র রওজা শরীফ জিয়ারত করেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন