নির্বাচনের আগে নিরপেক্ষ সরকার চায় বাম জোট
অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তদারকি সরকার গঠনের দাবি জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ৮টি বাম দল নিয়ে গঠিত বাম জোটের নেতারা গণ অবস্থান কর্মসূচি থেকে এই দাবি জানান।
জোটের অন্যান্য দাবিগুলো হলো তফসিল ঘোষণার আগে জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়া, বর্তমান নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা প্রবর্তনসহ গোটা নির্বাচন ব্যবস্থা আমূল সংস্কার।
অবস্থান কর্মসূচিতে ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে বলেন, আমাদের দেশে রাজনীতিতে দুটি ধারা বর্তমান। একটি হচ্ছে বুর্জোয়া আর অন্যটি বামপন্থী ধারা। তেল আর পানি যেমন মিশবে না তেমনি এই দুই ধারা কখনো এক হবে না। আজকে বাংলাদেশে পুঁজিবাদের শাসন ব্যবস্থা চলছে। তারা শাসন ও শোষণ করছে। সারা পৃথিবীতে পুঁজিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছে। বাংলাদেশে খুন, ধর্ষণ, গুম, সড়কে মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে। এ অবস্থার পরিবর্তন দরকার। বাংলাদেশের মানুষ এখন বামপন্থীদের দিকে তাকিয়ে আছে। বামপন্থীরা এখন যতটা সংঘবদ্ধ তা অতীতে দেখা যায়নি। এটি ইতিবাচক একটি দিক। তাঁরা আন্দোলন করে সমাজকে বদলে দিতে পারে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কেন্দ্রীয় সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, সামনে নির্বাচন। সংবিধান অনুয়ায়ী নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি। সরকারকে অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। সবাই বলছে শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন হবে। এই কথাটি ঠিক নয়। নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। নির্বাচনের আগে শেষ সংসদ অধিবেশন শুরু হয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সংবিধানে সংস্কার করতে হবে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে সব দলের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনকে আলোচনা করতে হবে। আমাদের দাবি হচ্ছে, নির্বাচনের আগে নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা, সংসদ ভেঙে দেওয়া, নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করা।
স্বাগত বক্তব্যে গণ অবস্থান কর্মসূচির সভাপতি ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক সাইফুল হক বলেন, বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের নামে গায়েবি মামলা, মিথ্যা মামলা দিয়ে দৌড়-ঝাপের মধ্যে রেখে এ দেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা হয়েছে। জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আর ১৫ দিনও বাকি নেই অথচ এখনো সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়নি। আমরা নির্বাচনের আগে এই সংসদ এখনই ভেঙে দিতে হবে। নির্বাচন কমিশন এখন বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছে তাই নির্বাচনের আগে এটি পুনর্গঠন করতে হবে। তা ছাড়া অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হতে পারে না। অবাধ নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তামাশার নির্বাচন গ্রহণ করা হবে না।
অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন, বাসদ নেতা বজলুর রশীদ ফিরোজ, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন নান্নু , বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী)-র কেন্দ্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির সদস্য আলমগীর হোসেন দুলাল, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন বাসদের নির্বাহী সদস্য খালেকুজ্জামান লিপন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন