বাংলাদেশকে ২৪৭ রানের লক্ষ্য দিল জিম্বাবুয়ে
মিডল অর্ডারে ব্রেন্ডন টেলর, শন উইলিয়ামস আর সিকান্দার রাজা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন বাংলাদেশের বোলারদের সামনে। যে কারণে জিম্বাবুয়ের রান প্রায় আড়াইশ’ ছুঁই ছুঁই হয়ে গেছে। তবুও শেষ মুহূর্তে বোলারদের নিয়ন্ত্রিণ বোলিংয়ের কারণে আড়াইশ পার হয়নি। যে কারণে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের সামনে ২৪৭ রানের লক্ষ্য স্থির করে দিয়েছে সফরকারী জিম্বাবুয়ে।
টস জিতে শুরুতে ব্যাট করতে জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজাকে আমন্ত্রণ জানান বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। আমন্ত্রণ ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই মারমুখী হওয়ার চেষ্টা জিম্বাবুয়ে দুই ওপেনারের। তবে বাংলাদেশের বোলারদের নিয়ন্ত্রণে ম্যাচকে টেনে আনতে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। তবে ব্রেন্ডন টেলর আর শন উইলিয়ামস আবার ম্যাচ বের করে নেয়ার চেষ্টা করেন। দু’জনের ৭৭ রানের জুটিতে বড় স্কোর গড়ে ওঠার ইঙ্গিত থাকলেও সেটা শেষ পর্যন্ত খুব বেশি এগুতে পারেনি।
সর্বোচ্চ ৭৫ রান করেন ব্রেন্ডন টেলর। ১ রানের জন্য হাফ সেঞ্চুরি মিস করেন সিকান্দার রাজা (৪৯) এবং ৩ রানের জন্য হাফ সেঞ্চুরি মিস করেন শন উইলিয়ামস (৪৭) রান। বাংলাদেশের পেসার সাইফউদ্দিন নেন ৩ উইকেট। মাশরাফি, মোস্তাফিজ, মিরাজ এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ নেন ১টি করে উইকেট। ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে জিম্বাবুয়ে সংগ্রহ করে ২৪৬ রান।
৭০ রানে দুই উইকেট পড়ার পর যেখানে সবাই ধারণা করেছিল জিম্বাবুয়ের ব্যাটিংয়ে বিপর্যয় শুরু হয়ে যাবে এবার; কিন্তু তেমন কিছু হতে দিলেন না ব্রেন্ডন টেলর আর শন উইলিয়ামস। এ দু’জনের ব্যাটে দুরন্ত গতিতেই এগিয়ে যাচ্ছিল জিম্বাবুইয়ানরা। ক্যারিয়ারে ৩৫তম হাফ সেঞ্চুরি করে নিজেকে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন টেলর।
এ দু’জনের ব্যাটে ৭৭ রানের জুটি গড়ে ওঠার পর অবশেষে সেখানে ভাঙন ধরাতে পেরেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ৩০তম ওভারে জুটি ভাঙার জন্য মাহমুদউল্লাহর হাতে বল তুলে দেন অধিনায়ক মাশরাফি। ওভারের তৃতীয় বলেই তার পাতা ফাঁদে পা দিলেন টেলর। রিয়াদের ঘূর্ণি রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে ব্যাট-বল করতে পারেননি টেলর। ফলে লেগ বিফোর হয়ে ফিরে যান তিনি। এর আগে ৭৩ বলে খেলেন ৭৫ রানের ইনিংস। ৯টি বাউন্ডারির সঙ্গে মেরেছেন ১টি ছক্কার মারও।
এরপর শন উইলিয়ামস আর সিকান্দার রাজা মিলে ৪১ রানের জুটি গড়ে আবারও বাংলাদেশের সামনে বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। হাফ সেঞ্চুরির সামনে দাঁড়িয়েছিলেন শন উইলিয়ামস। শেষ পর্যন্ত মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বলে উইকেটের পেছনে মুশফিকের হাতে ক্যাচ তুলে দেন উইলিয়ামস। তার আগে ৭৬ বলে খেলেন ৪৭ রানের ইনিংস।
এর আগে শুরুর স্পেলটা ঠিক মনের মতো করতে পারেননি অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। যে কারণে মাত্র দুই ওভার করেই ডেকে নেন অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে। বোলিংয়ে এসে প্রথম ওভারেই আঘাত হানেন এ ডানহাতি পেস বোলিং অলরাউন্ডার।
জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজাকে ইনিংসের পঞ্চম ওভারের পঞ্চম বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচে পরিণত করেন সাইফউদ্দিন। অফস্টাম্পের বাইরে পড়ে হালকা সুইংয়ে বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে ড্রাইভ করতে গিয়ে মুশফিকুর রহিমের হাতে ধরা পড়েন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক। আউট হওয়ার আগে ২ চারের মারে ১৮ বলে ১৪ রান করেন মাসাকাদজা।
শুরুতেই অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজার উইকেট হারালেও চাপ সামলে উঠছিল সফরকারী জিম্বাবুয়ে। দ্বিতীয় উইকেটে স্বাছন্দ্যেই রান তুলছিলেন ওপেনার সেফাস ঝুয়াও এবং অভিজ্ঞ ব্রেন্ডন টেলর। তবে নিজের দ্বিতীয় ওভারেই ঝুয়াওকে ফিরিয়ে দিয়ে জুটি ভেঙেছেন অফস্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ।
পঞ্চম ওভারেই মাসাকাদজার বিদায়ের পরে মাত্র ৪৩ বলে ৫২ রানের জুটি গড়ে ফেলেছিলেন ঝুয়াও এবং টেলর। দশম ওভারে বোলিং করতে এসে নিজের প্রথম ওভারে ১১ রান খরচ করে ফেলেন মিরাজ। দ্বিতীয় ওভারের ৫ বলেও দিয়ে ফেলেন সমান ১১ রান। তবে ওভারের শেষ বলেই কাজের কাজটি করে দেন এ তরুণ অফস্পিনার।
আগের বলেই সুইপ শটে বাউন্ডারি মারার পরের বলে বোলারের মাথার উপর দিয়ে ছক্কা মারতে চেয়েছিলেন ঝুয়াও। কিন্তু টাইমিংয়ে গড়বড় করে ফেলায় ধরা পড়েন লংঅফে দাঁড়ানো ফজলে রাব্বির হাতে। আউট হওয়ার আগে ১টি করে চার ও ছক্কার মারে ২০ রান করেন ঝুয়াও।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন