ওমরাহ যাত্রীদের থেকে কেন বেশি ভাড়া নিচ্ছে বিমান?
সৌদি আরবগামী সাধারণ যাত্রীদের চেয়ে ওমরাহ্ যাত্রীদের কাছ থেকে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা বেশি ভাড়া নিচ্ছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। অন্যদিকে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে সপ্তাহে তিনটি ফ্লাইট জেদ্দা গেলেও চট্টগ্রামের ওমরাহ যাত্রীদের কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে ১০০ ডলার বেশি ভাড়া। বিমান বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের দাবি, বাড়তি চাহিদা ও চট্টগ্রাম থেকে ফ্লাইট পরিচালনায় অতিরিক্ত খরচের কারণে বেশি ভাড়া নেয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি ফ্লাইট চালুর দাবি জানিয়েছেন চট্টগ্রামের হজ এজেন্টরা।
মহান আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের আশায় মুসলমানদের অনেকেই মৌসুম ছাড়াও সুবিধাজনক সময়ে ওমরাহ হজ পালন করেন। হজ এজেন্টদের সংগঠন হাবের হিসাবে বছরে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার বাংলাদেশী ওমরাহ করতে সৌদি আরবে যান। কিন্তু ওমরাহ যাত্রীদের জন্য পৃথক কোন ফ্লাইট না থাকলেও অন্য যাত্রীদের চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে বাংলাদেশ বিমান। এটাকে অযৌক্তিক দাবি করে ভাড়া নির্ধারণে সমতা আনার দাবি জানিয়েছে হাব।
হাবের মহাসচিব শাহাদাত হোসেন তসলিম বলেন, ‘সাধারণ যাত্রীদের সঙ্গে ওমরাহ যাত্রীদের পার্থক্য প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা। একজন সাধারণ যাত্রী যদি ৩৮ হাজার টাকা দিয়ে একই এয়ারক্রাফটে যাতায়াত করতে পারেন তাহলে ওনাদের বেশি লাগবে কেন? গন্তব্যটাও যেহেতু একই। বরং ওমরাহ যাত্রীদের জন্য কিন্তু জেদ্দা এয়ারপোর্টের ট্যাক্স কম।’
এদিকে একই বিমানে গেলেও চট্টগ্রামের ওমরাহ্ যাত্রীদের কাছ থেকে ৮ হাজার টাকা বেশি ভাড়া নিচ্ছে বাংলাদেশ বিমান। হজ্ব এজেন্টদের অভিযোগ, যাত্রীর অভাব না থাকলেও চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা না করায় চরম বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন তারা।
রহমাতুল্লিল আলামিন হজ কাফেলার প্রোপাইটর স. উ. ম. আব্দুস সামাদ বলেন, ‘চট্টগ্রাম থেকে যদি কেউ চাকরির বিষয়ে জেদ্দা যায় তাহলে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের ভাড়া একই। কিন্তু, ওমরাহ যাত্রীদের কাছে একশ ডলার বর্ধিত করাটা বিমানের বিমাতাসূলভ আচরণ।’
হাব চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘বিমানের ফ্লাইট যদি ফাকা যায় তাহলে ভাড়া বৃদ্ধির বিষয় আছে। ঢাকা থেকে উনি চট্টগ্রাম গেলেন। চট্টগ্রামের এক ঘন্টা অপেক্ষা করলেন। আবার উনি চট্টগ্রাম থেকে জেদ্দা গেলেন। কিন্তু, উনার কাছ থেকে তো ভাড়া বেশি নেয়া হল না।’
বাংলাদেশ বিমান কর্তৃপক্ষ বলছে, ওমরাহ যাত্রীদের টিকিট টু ওয়ে হওয়ায় বাড়তি ভাড়া নেয়া হচ্ছে। আর অবতরণ খরচসহ বাড়তি পরিচালন ব্যয়ের কারণে চট্টগ্রামের ওমরাহ যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া নেয়া হচ্ছে বলে দাবি সংস্থাটির।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ বিভাগের মহাপরিচালক শাকলি মেরাজ বলেন, ‘ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের স্বল্প দূরত্বে আমাদের একটা ইঞ্জিন সাইকেল নষ্ট হয় যার একটা কস্ট এখানে যুক্ত হয়। পাশাপাশি চট্টগ্রামে পার্কিং, ল্যন্ডিং চার্জও বাড়তি যোগ হয়।’
বছরে চট্টগ্রাম থেকে প্রায় ১৮ থেকে ২০ হাজার হাজী ওমরাহ করতে সৌদি আরব যান। এছাড়া চট্টগ্রামের বিপুল সংখ্যক লোক সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে কর্মরত আছেন। এ অবস্থায় ওমান এয়ার ও ফ্লাই দুবাই চট্টগ্রাম থেকে ফ্লাইট বন্ধ করে দেয়ায় বেশি বিপাকে পড়েছে এ অঞ্চলের মানুষ।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন