ফ্যাশন ও রুপ সচেতন নারীদের জন্য দু’বোনের ‘নিশাস কাপবোর্ড’
পূর্ণিমা মেহজাবিন : দোকানে গিয়ে হাতে ধরে যে পোশাক কিনে আনছেন, বাসায় এনে হয়ত দেখছেন ধুয়ে দেওয়ার পর সব রঙ নষ্ট হয়ে গেল। আবার দেখা যায় অনলাইনে ছবি দেখে যা অর্ডার করছেন, হাতে পাওয়ার পর অবাক হয়ে গেছেন পোশাকের ভিন্নতা দেখে। গ্রাহকের সাথে এমন প্রতারণা এখন অনেক বেশি পরিমানে হচ্ছে। এমতাবস্থায় অনলাইন থেকে বিশ্বাস হারিয়ে ফেলছেন অনেক গ্রাহক। দেশি হোক বা বিদেশি যে কোনো পোশাকই অনলাইন থেকে কিনতে চাইলে সবার আগে প্রয়োজন নির্ভরতা। কিন্তু নির্ভরতার এ জায়গার আজ যেন বড্ড অভাব।
‘এ উদ্যোগের শুরু থেকেই আমাদের ভাবনা ছিল গ্রাহকের বিশ্বাস অর্জন করা। অনলাইনে বিশ্বাস অর্জন করে কাজ গুছিয়ে করা বেশ কঠিন কাজ। যেহেতু গ্রাহক সরাসরি পোশাক হাতে দেখে কিনতে পারছেন না তাই তারা দ্বিধায় থাকেন। আর আমরা যখন তাদের পোশাক ডেলিভারি দিই তখন তাদের বলেই দেওয়া থাকে যদি পোশাকের রঙ নিয়ে বা অন্য কোনো বিষয় নিয়ে কোনো দ্বিধা থাকে তাহলে অবশ্যই তখনই তারা ডেলিভারি ম্যানের হাতে পোশাক ফিরিয়ে দিতে পারেন। এজন্য তাদের কোনো ফিরতি চার্জও দিতে হবে না।’ কথাগুলো বলছিলেন ‘নিশাস কাপবোর্ড’ ও ‘এরিনাস ক্লোজেট’র কর্ণধার কামরুন নাহার নিশা।
অনলাইন জগতে বিশ্বাস তৈরি করে নিজেদের কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন তার। বড় বোন শামসুন নাহার সুমি’র সাথে মিলে দুইজন মিলে শুরু করেছিলেন এরিনা’স ক্লোজেট। নিশা এখন সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও উদ্যোগ বিষয়ে দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছেন হোম ইকোনোমিকস কলেজে। বড় বোন ব্যাংকে চাকরি করতেন। সংসার সামলে যেটুকু সময় ঘরে অলসভাবেই কাটত তা থেকেই এই ব্যবসার চিন্তা মাথায় আসে তাদের। ঘরোয়াভাবে দুই বোন মিলে এ কাজ শুরু করলেও এখন তাদের গ্রাহক অনেক। দেশের বাইরেও রয়েছেন তাদের গ্রাহক।
‘আমাদের এখানে কোনো রেপ্লিকা নেই। প্রত্যেকটি পোশাক অরিজিনাল। গ্রাহক যেমনটি ছবিতে দেখছেন ঠিক তেমনটিই তারা হাতে পান। আর তাই তাদের মাঝে আমাদের জন্য বিশ্বস্ততাও আছে।’ বলছিলেন নিশা।
মূলত কী ধরনের পোশাক রয়েছে ‘এরিনা’স ক্লোজেটে’- এ প্রশ্নের জবাবে নিশা জানান, আমাদের এখানে এ মুহূর্তে মেয়েদের সব ধরনের পোশাকই আছে। ইন্ডিয়ান ডিজাইনেবল থ্রি পিস, ওয়ান পিস, কারচুপি, এমব্রয়ডারি শাড়ি, পাকিস্তানি কুর্তি, গাউন, কামদানি, থ্রি পিস, দেশিয় হাতের কাজের শাড়ি থেকে শুরু করে সব ধরনের পোশাক, স্ক্রিন প্রিন্ট সব পাওয়া যায় এখানে। কাস্টমাইজড কাজও আছে।
নিজেদের কাজ নিয়ে বেশ উৎফুল্ল দুই বোন। তারা জানেন তারা গ্রাহককে ভালো প্রোডাক্ট দিচ্ছেন। আর এ কারণে তাদের বিশ্বস্ততার ব্যাপ্তি ছড়িয়েছে দেশের বাইরেও। দেশের ভিতর প্রোডাক্ট ডেলিভারি চার্জ তারা রাখছেন না। বাইরে পাঠাতে হলে শুধুমাত্র পাঠানোর চার্জটা গ্রাহককে বহন করতে হয়।
ভবিষ্যতে এরিনা’স ক্লোজেটকে কোথায় দেখতে চান এ প্রশ্নের জবাবে নিশার জবাব বেশ গুছানো। ‘যেহেতু ফ্যাশন ভালোবাসি তাই এই কাজ নিয়েই আরও সামনে এগিয়ে যেতে চাই। পোশাকে নিজ ডিজাইনের ফ্যাশনধারা তৈরি করতে চাই। যা দিয়ে একদম আলাদা করে চেনা যাবে এরিনা’স ক্লোজেটকে। আর শুধুমাত্র মেয়েদের পোশাকের মাঝেই আটকে থাকতে চাই না। বিভিন্ন বয়সী মানুষের জন্য পোশাক আর বিভিন্ন ধরনের প্রোডাক্ট নিয়েও কাজ করার ইচ্ছা আছে।
ইতোমধ্যে এ নিয়ে কাজও শুরু করে দিয়েছি। অনলাইন গ্রুপ ‘নিশা’স কাপবোর্ড’র মাধ্যমে এ কাজ শুরু করেছি। সেখানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মেক-আপ আইটেম, ছেলেদের পাঞ্জাবী, বিছানার চাদর, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ব্যাগসহ বেশ কিছু জিনিস পাওয়া যাচ্ছে।’
দুই বোনের নেওয়া এ উদ্যোগ ধীরে ধীরে আরও ব্যাপ্তি ছড়াক। এরিনা’স ক্লোজেটের যাত্রাপথ হোক আরও সমৃদ্ধ। তাদের জন্য রইলো নিরন্তর শুভকামনা।
এরিনা’স ক্লোজেট পেইজের লিংক: https://www.facebook.com/pg/erinascloset/photos/?ref=page_internal
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন