পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে বসছে রেল লাইনের স্ল্যাব
পদ্মা সেতুতে বসেছে রেল লাইনের স্ল্যাব। নদীর জাজিরা প্রান্তে এরমধ্যে যে স্প্যানগুলো বসানো হয়েছে, সেগুলোর নিচের অংশে রেল স্ল্যাব বসানো শুরু হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে স্প্যানের ওপরের অংশে শুরু হবে রোড স্ল্যাব বসানোর কাজ। এছাড়া প্রায় ৫ মাস পর সেতুতে নতুন স্প্যান যোগ হতে পারে এ মাসেই। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত মূল সেতুর কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৭১ শতাংশ।
বর্ষায় উত্তাল পদ্মা এখন শান্ত। নদীতে স্রোত নেই, কাজে তাই গতি আসার কথা।
তবে সেখানে বাধা নদীর নাব্য সঙ্কট। পলি জমে কমে এসেছে নদীর গভীরতা ও প্রস্থ। দিনরাত ড্রেজার দিয়ে চলছে খনন। তবু স্প্যানবাহী ক্রেন চলাচলের জন্য উপযোগী না হওয়ায় সেটি অপেক্ষায় আছে নদীর মাওয়া প্রান্তে।
জাজিরায় ৫টি স্প্যানের সবশেষটি বসেছে এ বছরের জুনে। এরপর মাওয়া প্রান্তে ৮টি পিলার নদীতে প্রস্তুত হলেও নতুন স্প্যান বসানোর জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে। কারণ ধারাবাহিকতা রক্ষায় পরের স্প্যানটি বসানো হবে জাজিরা প্রান্তে আগের ৫টি স্প্যানের সঙ্গেই। সে পিলারটি এখনো প্রস্তুত হয় নি। আশা করা হচ্ছে, চলতি মাস অথবা পরের মাসে সেটি হবে।
পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ডিসেম্বর নাগাদ আমরা পারবো হয়তো। এ বছরের শেষে আমরা হয়তো চেষ্টা করবো আরেকটা উঠানোর জন্য। যদি সোজা হতো তাহলে যেকোনো স্প্যান যেকোনো জায়গায় লাগিয়ে দেয়া যেতো। কিন্তু, যেহেতু ‘এস’ আকৃতির মতো হয়েছে তাই প্রত্যেকটাই আলাদা। কাজেই একটা স্প্যান আরেক জায়াগায় লাগানো যাবে না।’
সেতুর স্প্যানগুলোর নিচের অংশে চলবে ট্রেন আর ওপরের অংশে গাড়ি। যে ৫টি স্প্যান বসানো হয়েছে, এর মধ্যে শুরু হয়ে গেছে সেখানে রেল লাইনের স্ল্যাব বসানোর কাজ। এখন পর্যন্ত বসানো হয়েছে ৮০টি স্ল্যাব। এই স্ল্যাবগুলোর ওপর বসানো হবে রেল লাইন। অল্প কিছু দিনের মধ্যে স্প্যানের ওপরের অংশে ৪ লেনের রোড স্ল্যাব বসানোর কাজও শুরু হবে। তখন ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হবে মূল সেতুর চূড়ান্ত আকৃতি।
পদ্মা সেতুর আন্তর্জাতিক পরামর্শক দলের প্রধান অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, ‘রেলওয়ে যেটার উপরে বসবে সেটা তো আগে থেকেই ঢালাই করে জোড়া লাগানো হচ্ছে। এখনো রোড স্লাভ বসানো শুরুই হয়নি।’
সেতুর ইয়ার্ডে ১০টি স্প্যান পুরো প্রস্তুত করে রাখা আছে। তবে এগুলোর নির্দিষ্ট পিলার তৈরি না হওয়ায় তা এখনি বসানো সম্ভব হচ্ছে না। আবার অন্যদিকে বর্তমানে যে ৮টি পিলার তৈরি আছে, সেগুলোর স্প্যান এখনো চীন থেকে মাওয়ায় এসে পৌছায় নি। এ দুটো কাজের সমন্বয় হলে আগামী কয়েকমাসের মধ্যে যোগ করা সম্ভব হবে আরো ১০টির বেশি স্প্যান।
পাঁচ মাস আগে সবশেষ স্প্যানটি বসানো পর অপেক্ষাটা দীর্ঘতর হচ্ছে। বসানো স্প্যানগুলোর পাশে আরেকটি নতুন পিলার স্থাপন করা সম্ভব হলে তার উপর বসানো হবে নতুন স্প্যান। আর প্রকৌশলীরা বলছেন আগামী মার্চের মধ্যেই পদ্মাসেতুর সব ধরণের জটিলতার অবসান হবে। তখন একসঙ্গে দৃশ্যমান করা সম্ভব হবে অনেকগুলো স্প্যান।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন