কাঁদতে কাঁদতে ধানের শীষে ভোট চাইলেন মনির কন্যা সায়মা
‘আজকে ৪০টা দিন বাবা কারাগারে বন্দী। এর মাঝে একবার হাজিরা দিতে এসে আদালতে পড়ে গিয়ে বাঁ হাতটা ভেঙ্গে ফেলেছেন। তিনি বয়স্ক মানুষ, এতো কষ্ট সহ্য করতে পারেন না। এখনো জেলে অসুস্থ…। তার জামিনের জন্য আমি গত ৪০টা দিন হাইকোর্টের এ মথা থেকে ও মাথা দৌড়াচ্ছি পাগলের মতো। একটা মামলা শেষ করে আসি- আরেকটা মামলা দায়ের হয়; বাবা মুক্তি পান না…’
কারাবন্দী পিতার পক্ষে ভোট চাইতে গিয়ে এক ঘরোয়া বৈঠকে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে কথাগুলো বলেন কুমিল্লা-১০ (সদর দক্ষিণ-নাঙ্গলকোট-লালমাই) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ও দলের ভাইস-চেয়ারম্যান মনিরুল হক চৌধুরীর কন্যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সায়মা ফেরদৌস চৌধুরী। এ সময় তিনি ছিলেন অনেকটাই আবেগাপ্লুত, চোখ ছিল অশ্রুসজল।
মঙ্গলবার রাতে সদর দক্ষিণ উপজেলার নোয়াগ্রামে এ বৈঠকের আয়োজন করে উপজেলা ছাত্রদল।
‘বাবার এসব কষ্ট-অপমানের জবাব ব্যালটের মাধ্যমেই দিতে হবে’ উল্লেখ করে ড. সায়মা ফেরদৌস বলেন, এ জন্য প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করা। বাবা সারাটা জীবন আপনাদের জন্য, এই কুমিল্লার জন্য কাজ করেছেন। এর প্রতিদান আপনাদেরকে দিতে হবে। তিনি যদি মুক্তি না পান, আপনারাই হয়ে উঠনে একেক জন মনির চৌধুরী। আপনাদের সাথে নিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি নির্বাচনী মাঠে থাকব; ভোট বিল্পবের মাধ্যমেই বাবাকে মুক্ত করব, বলেন তিনি।
ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দিয়ে পিতাকে জয়ী করার আবেদন জানিয়ে সায়মা বলেন, আজ থেকে আপনারাই আমার বাবা-চাচা, ভাই-বোন। আবাল-বৃদ্ধ বণিতা ৩০ তারিখে মাঠে নামবেন। আমি থাকব, আপনাদের সাথে। কেউ রুখতে পারবে না আমাদের। তারা যদি বাধা দেয় দিক, ভয় পাই না। তারা যতো বাধা দিবে, আমাদের শক্তি তত বৃদ্ধি পাবে। ৩০ তারিখে বিজয়ের মাধ্যমে বাবাকে মুক্তার মালা পড়িয়ে আমরা কারাগার থেকে মুক্ত করে আনব।
বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মনিরুল হক চৌধুরীর ছোট ভাই জহিরুল হক চৌধুরী, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মোস্তফা মোর্শেদ চৌধুরী, আমান উল্যাহ আমান ও কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা যুবদলের সভাপতি খলিলুর রহমান মজুমদার প্রমুখ।
পরে ড. সায়মা চৌধুরী লালমাই উপজেলা ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সাথেও বৈঠক করেন।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে দুর্বৃত্তদের পেট্রলবোমা হামলায় বাসের ৮ যাত্রী নিহত হওযার ঘটনায় করা মামলার (এজাহারভুক্ত নয়) চার্জশিটভুক্ত আসামি মনিরুল হক চৌধুরী। দীর্ঘদিন জামিনে থাকার পর গত ২৪ অক্টোবর আদালতে পুনরায় জামিন আবেদন করলে আদালত তা না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এ মামলায় গত ৪ নভেম্বর উচ্চ আদালত থেকে জামিন আদেশ হলেও কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার দুটি মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানোয় তিনি কারাগারে আছেন।
পরে গত ২২ নভেম্বর কুমিল্লার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে লুটিয়ে পড়েন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ও এমপি মনিরুল হক চৌধুরী। ওইদিন আদালতের বিচারক তার জামিন ও রিমান্ড নামঞ্জুর করেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন