শহীদ মিনারে আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলকে শ্রদ্ধা

সুরকার ও মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হয়েছে।

বুধবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য তার মরদেহ সেখানে নেওয়া হয়।

তাকে শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনারে নানা পেশার মানুষ জড়ো হয়েছেন। উপস্থিত হয়েছেন সংগীত ও চলচ্চিত্র অঙ্গনেরও লোকজনও।

সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য বুলবুলের মরদেহ দুপুর ১২টা পর্যন্ত শহীদ মিনারে রাখা হবে। দেয়া হবে রাষ্ট্রীয় সম্মান। বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি)। সেখানেও তার জানাজা হবে। এরপর মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হবে আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলকে।

মঙ্গলবার ভোর ৪টার দিকে আফতাবনগরের নিজ বাসায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল।

আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল এক বছর ধরে নানা অসুস্থতায় ভুগছিলেন। ২০১৮ সালের জুনে তার হৃদযন্ত্রের ধমনীতে দুটি স্টেন্ট লাগানো হয়েছিল।

আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল ১৯৫৭ সালের ১ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে তিনি মাত্র ১৫ বছর বয়সে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।

অসংখ্য জনপ্রিয় গানের গীতিকার এবং সুরকার আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। তিনি কয়েকশ’ চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন। তার করা গানগুলো এখনও শ্রোতা-দর্শকদের মুখে মুখে ফেরে।

বুলবুলের লেখা ও সুর করা বহু জনপ্রিয় গানের শিল্পী রুনা লায়লা, সাবিনা ইয়াসমিন, অ্যান্ড্রু কিশোর, প্রয়াত খালিদ হাসান মিলু, কনকচাঁপা, সামিনা চৌধুরী ও মনির খান।

‘সব ক’টা জানালা খুলে দাও না’, ‘আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন’, ‘পড়ে না চোখের পলক’, ‘আমার গরুর গাড়িতে বৌ সাজিয়ে’, ‘আম্মাজান আম্মাজান’, ‘ঘুমিয়ে থাকো গো স্বজনী’, ‘চিঠি লিখেছে বউ আমার’, ‘জাগো বাংলাদেশ জাগো’, ‘ও মাঝি নাও ছাইড়া দে ও মাঝি পাল উড়াইয়া দে’, ‘সুন্দর সুবর্ণ তারুণ্য লাবণ্য’, ‘সেই রেল লাইনের ধারে’, ‘মাগো আর তোমাকে ঘুম পাড়ানি মাসি হতে দেব না’— এ রকম অসংখ্য জনপ্রিয় বাংলা গানের সুর করেছেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল।

তিনি রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মান একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং রাষ্ট্রপতির পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।