ভোটের আগে কংগ্রেসে সাধারণ সম্পাদক হলেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী

বহু বছরের জল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে আনুষ্ঠানিক ভাবে কংগ্রেসে যোগদান করলেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী।

আজ বুধবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী জানান, তার বোন প্রিয়াঙ্কাকে এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়, প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে উত্তরপ্রদেশের পূর্বাঞ্চলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এদিনই পশ্চিমাঞ্চলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে।

কংগ্রেস সভাপতি রাহুল বরেন, ‘প্রিয়াঙ্কা-জ্যোতিরাদিত্যর ওপর আস্থা রাখুন, ওরা ভাল ফল করে দেখাবে।’

এতদিন প্রিয়াঙ্কা যেন কংগ্রেসে থেকেও ছিলেন না। লোকসভা ভোটের প্রচারসভায় তাকে মাঝে মধ্যে দেখা যেত। কিন্তু বহু বছর ধরে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা ছিল, কবে সক্রিয় রাজনীতিতে আসবেন প্রিয়াঙ্কা।

অবশেষে সেই জল্পনায় ইতি টানলেন রাহুল। লোকসভা ভোটের আগে মোক্ষম সময়ে প্রিয়াঙ্কাকে এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক পদে নিয়ে এলেন রাহুল। মোক্ষম সময় কারণ, নানা ইস্যুতে প্রশ্নের মুখে মোদী সরকার। দেশ জুড়ে কার্যত মোদী-বিরোধী হাওয়া। বিজেপি-বিরোধী মহাজোট গঠনের প্রস্ততিও চলছে জোরকদমে।

এই পরিস্থিতিতে প্রিয়াঙ্কা সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় সাধারণ মানুষের কাছে কংগ্রেসের গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

এই রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একটা বড় অংশ মনে করেন, সব রাজ্যে কংগ্রেসের সব স্তরের নেতা-কর্মী থেকে শুরু করে আম জনতার মধ্যে প্রিয়াঙ্কার গ্রহণযোগ্যতা দাদী ইন্দিরা গান্ধীর মতোই। পরীক্ষিত না হলেও তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতার উপরও অনেকেই আস্থা রাখেন।

এই সব কারণেই তাকে কংগ্রেসের ‘ব্রহ্মাস্ত্র’ হিসেবেও উল্লেখ করেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ। এবার লোকসভা ভোটের ঠিক আগে আগে আস্তিন থেকে সেই তুরুপের তাস বের করলেন রাহুল গান্ধী।

২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশে বিজেপির বিপুল সাফল্যই কার্যত মোদীর জন্য দিল্লির সিংহাসনের রাস্তা খুলে দিয়েছিল। এবার সেখানে বিপরীত স্রোত। বিজেপিকে হারাতে জোট বেঁধে ফেলেছেন মায়াবতী-অখিলেশ। কংগ্রেসও ৮০টি আসনেই প্রার্থী দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। ফলে এবারের ভোটে কংগ্রেসের কাছেও বড় চ্যালেঞ্জ উত্তরপ্রদেশ।

একদিকে বিজেপি এবং অন্যদিকে বিএসপি-এসপি জোটকে মোকাবিলা করতে নিয়ে এলেন ৪৭ বছরের প্রিয়াঙ্কাকে। সঙ্গে পশ্চিমাঞ্চলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মধ্যপ্রদেশের তরুণ নেতা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে।

রাহুল বলেন, এবার ব্যাকফুটে নয়, সরাসরি মাঠে নেমে গরিব, কৃষক, মজুরদের জন্য লড়াই করবেন প্রিয়াঙ্কা জ্যোতিরাদিত্য। দু’জনের ওপর আস্থা রাখুন, ওরা ভাল ফল করে দেখাবেন।

অন্যদিকে ঘোষণার পরই সারা দেশ থেকে কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের শুভেচ্ছা বার্তায় ভাসছেন প্রিয়াঙ্কা। অভিনন্দন জানিয়েছেন তার স্বামী রবার্ট বঢরাও।