জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তোলার আহ্বান রাষ্ট্রপতির
গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা, আইনের শাসন ও অব্যাহত আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মত মৌলিক প্রশ্নে সব রাজনৈতিক দল, শ্রেণি ও পেশা নির্বিশেষে সবার ঐকমত্য গড়ে তোলার সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণের জন্য উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
বুধবার জাতীয় সংসদ ভবনে একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে দেয়া ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান।
আবদুল হামিদ বলেন, জাতীয় সংসদ দেশের জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার কেন্দ্রবিন্দু। জাতীয় ঐকমত্য ব্যতীত শান্তি ও সমৃদ্ধি স্থায়ী রূপ পেতে পারে না। স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, পরমতসহিষ্ণুতা, মানবাধিকার ও আইনের শাসন সুসংহতকরণ এবং জাতির অগ্রযাত্রার স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষার সফল বাস্তবায়নে সরকারি দলের পাশাপাশি বিরোধী দলকেও গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে হবে। আমি জনগণের প্রত্যাশা পূরণের প্রতিষ্ঠান এই মহান জাতীয় সংসদে সরকারি ও বিরোধী দলসহ সবাইকে সম্মিলিতভাবে যথাযথ ও কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানাই।
তিনি বলেন, নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর জাতীয় জীবনে নতুন প্রাণ সঞ্চারিত হয়েছে। আশা করি, বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের গৃহীত উদ্যোগ আরও সুসংহত ও গতিশীল হবে। শান্তি, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির যে পথে আমরা হেঁটেছি, সে পথেই বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। ২০২০ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে মধ্য-আয়ের দেশ হিসেবে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করব।
রাষ্ট্রপতি বলেন, আমাদের দৃষ্টি ২০২১ সাল ছাড়িয়ে আরও সামনের দিকে, ২০৪১ সালে বিশ্বসভায় বাংলাদেশ একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশের মর্যাদায় অভিষিক্ত হবে, এটাই জাতির প্রত্যাশা। আমি দৃঢ়ভাবে আশাবাদী মানবাধিকার, সুশাসন ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপায়ন এবং সমাজের সব স্তরে প্রত্যক্ষ জন-সম্পৃক্তির মধ্য দিয়ে আমরা নির্ধারিত লক্ষ্যসমূহ অর্জনসহ একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনে সক্ষম হবো।
তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ, কর্মচঞ্চল, সুখী, সুন্দর ও উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ সবার কাম্য। ইতিহাসের সাহসী সন্তানেরা লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে একটি স্বাধীন দেশ উপহার দিয়ে গেছেন। আমাদের দায়িত্ব এ দেশ ও জাতির অগ্রযাত্রাকে বেগবানকরা।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত গৌরবোজ্জ্বল স্বাধীনতা সমুন্নত ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুজ্জল রাখতে দেশ থেকে সন্ত্রাস, মাদক, দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদ সম্পূর্ণরূপে নির্মূলের মাধ্যমে শোষণমুক্ত সমাজ-প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তুলতে বাঙালি জাতিকে আরও ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, একাত্তরের শহীদদের কাছে আমাদের অপরিশোধ্য ঋণ রয়েছে। আসুন, ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে এবং দল-মত-পথের পার্থক্য ভুলে জাতির গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা ও দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন তরান্বিত করার মধ্য দিয়ে আমরা লাখো শহীদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন