পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের পা ধুয়ে দিলেন মোদি
মাথায় সাদা চন্দন আর গেরুয়া কুর্তা পরে একটা নিচু টুলে বসেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার সামনেই চেয়ারে বসে ছিলেন পাঁচ পরিচ্ছন্নতাকর্মী পেয়ারে লাল, ছবি, হোরি লাল, নরেশ কুমার এবং জ্যোতি। তারা প্রত্যেকেই কুম্ভে আবর্জনা পরিস্কারের কাজ করেন। এটা তাদের নিত্যদিনের কাজ।
কিন্তু রোববার তাদের দিনটাই যেন বদলে গেল। কারণ সেদিন কুম্ভে স্নান শেষ করে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী তাদের পা ধুইয়ে দিয়েছেন। প্রথমে ঝকঝকে নতুন পাত্রে রাখা পানি দিয়ে তাদের পা ধুয়ে দেন মোদি। তারপর নতুন তোয়ালে দিয়ে সবার পা মুছে দিয়েছেন।
পুরো ঘটনাই টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে। এই ঘটনা থেকে অনেকেরই মহাত্মা গান্ধীর কথা মনে হয়েছে।
কারণ এক সময় মহাত্মা গান্ধীও এভাবেই পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সম্মান জানাতেন। গান্ধীর নাম নিয়েই ক্ষমতায় এসে স্বচ্ছতা অভিযান শুরু করেছিলেন মোদি। নিজে হাতে ঝাড়ু দিয়েছিলেন রাজপথ। রোববার পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের পা ধুইয়ে তিনি আরও একবার মহত্মের পরিচয় দিলেন।
বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ বলেছেন, এ দেশে গান্ধীর পরে প্রথমবার কোনও জননেতার মধ্যে এ ধরনের মহানুভবতা দেখা গেছে। এক নতুন যুগের শুরু হলো।
অপরদিকে মোদি বলেন, আজ জীবনে এমন এক মুহূর্ত এসেছে, যা জীবনভর আমার সঙ্গে থাকবে। কিন্তু তার সমালোচকরা বলছেন, লোকসভা ভোটকে কেন্দ্র করে একই সঙ্গে উচ্চবর্ণের হিন্দু এবং দলিত-দু’পক্ষেরই মন জয়ের চেষ্টা করছেন মোদি।
এক দিকে তিনি ত্রিবেণী সঙ্গমে ডুব দিয়েছেন। কমলা জ্যাকেটের উপর গেরুয়া চাদর জড়িয়ে মন্ত্রোচ্চারণ করে নিজেকে ধর্মপ্রাণ হিন্দু হিসেবে তুলে ধরেছেন। তার পরেই পরিচ্ছনতাকর্মীদের পা ধুয়ে দলিতদের মন জয়ের চেষ্টা করেছেন। গত পাঁচ বছরে মোদির শাসনামলেই দলিতদের উপর গেরুয়াপন্থীদের অত্যাচার বেড়েছে। তিনি এসব কমানোর কোন উদ্যোগই নেননি।
মোদির এই কাজের সমালোচনা করে পরিচ্ছন্নতা কর্মচারী আন্দোলনের নেতা বেজওয়ারা উইলসন বলেন, শুধু ২০১৮ সালেই বিভিন্ন নর্দমা এবং সেপটিক ট্যাঙ্ক পরিস্কার করতে গিয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তিনি (মোদি) চুপ ছিলেন। এখন পা ধুয়ে দিচ্ছেন!
মোদি যাদের পা ধুয়ে দিয়েছেন তাদের মধ্যে নরেশ কুমার বলেন, এমন যে কিছু হবে, তা তারা জানতেনই না। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী তাদের পা ধুয়ে দেয়ায় তারা স্তম্ভিত। নরেশ কুমারদের জানা না থাকলেও আসলে সব ব্যবস্থা আগে থেকেই তৈরি ছিল।
পায়ের পাশে ঝকঝকে ধাতুর পাত্র, পানি, তোয়ালে সবই রাখা ছিল। পরিচ্ছন্নতাকর্মী জ্যোতি বলেন, এত সম্মান পাব কোনদিনও ভাবিনি। কতদিন কুম্ভে কাজ করছি তাও জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আর মুগ্ধ পেয়ারে লাল বলেন, উনিই যেন ফের প্রধানমন্ত্রী হন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন