সীমান্ত পেরিয়ে বিমান হামলার দাবি ভারতের, অস্বীকার পাকিস্তানের
জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার পর সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানের ‘বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ঘাঁটিতে’ হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করছে ভারত। অন্যদিকে, এ হামলায় ভারত পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে বলে দাবি পাকিস্তানের। তারা বলছে, পাকিস্তানের বিমানবাহিনী ভারতের বিমানবাহিনীকে আক্রমণ করতে না দিয়ে ফিরিয়ে দিতে বাধ্য করেছে।
ভারতীয় প্রতিবেদন অনুযায়ী, মঙ্গলবার ভোররাত সাড়ে ৩টার দিকে ১২টি মিরাজ-২০০০ যুদ্ধবিমান পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের মুজাফফারাবাদে জঙ্গি আস্তানায় এ হামলা চালায়।
এ হামলায় প্রচুর ‘বিচ্ছিন্নতাবাদীর’ মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করছে ভারতীয় বিমানবাহিনী। জইশ-ই-মোহাম্মদের অন্তত তিনটি কন্ট্রোল রুম এবং বেশ কয়েকটি লঞ্চ প্যাড ধ্বংস করা হয়েছে বলেও দাবি করছে তারা।
ভারতীয় বিমানবাহিনীর বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থা এএনআই জানায়, ওই ‘বিচ্ছিন্নতাবাদীদের’ আস্তানায় এক হাজার কেজি লেজার গাইডেড বোমা নিক্ষেপ করে সম্পূর্ণই ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।’
একটি সূত্র ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে জানায়, জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মোহাম্মদের জঙ্গিঘাঁটিতে পরিকল্পনা অনুযায়ী হামলা চালানো হয়েছে। এবং এ হামলা ১০০ ভাগ সফল হয়েছে।
জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলায় ৪০ সিআরপিএফ জওয়ান নিহত হওয়ার দুই সপ্তাহের মাথায় অভিযুক্ত জইশ-ই-মোহাম্মদের আস্তানায় হামলা চালানো হয়েছে বলে ভারতের পক্ষ থেকে দাবি উঠল।
তবে ভারতীয় বিমানবাহিনীর এই হামলার কথা অস্বীকার করেছে পাকিস্তান। তারা বলছে, সীমান্ত পেরিয়ে ভারতীয় বিমানবাহিনী হামলা চালাতে এসেছে ঠিকই, কিন্তু পাকিস্তান বিমানবাহিনী তাদের প্রতিহত করে ফিরিয়ে দিতে বাধ্য করেছে।
পাকিস্তানের সামরিক মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ ঘাফুর এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘ভারতীয় বিমানবাহিনী মুজাফফারাবাদে অনুপ্রবেশ করেছিল। কিন্তু পাকিস্তান বিমানবাহিনী তৎক্ষণাৎ কার্যকর ভূমিকা পালন করে তাদের প্রতিহত করে ফিরিয়ে দিয়েছে।’ এ সময় ভারতের একটি মিরাজ-২০০০ যুদ্ধবিমান ভেঙে পড়েছে বলেও দাবি করেছেন মেজর জেনারেল আসিফ ঘাফুর।
বিবিসির দেওয়া তথ্যমতে, যদি এ ঘটনা সত্যি হয়, তবে ১৯৭১ সালের পর এই প্রথম ভারতীয় বিমানবাহিনী সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে প্রবেশ করল।
২০১৬ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর পাক-ভারত সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানের মাটিতে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালিয়েছিল ভারতীয় সেনা। সেবার উরির জঙ্গি হামলার জবাব দিতে ওই সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করা হয়েছিল। এবার পুলওয়ামার জঙ্গি হামলার জবাব দিতে মোট এক হাজার কেজির বোমা ফেলে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করা হলো।
এদিকে, এ ঘটনার পরই আজ সকালে জরুরি বৈঠকে বসেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের ৭ নম্বর লোককল্যাণ মার্গে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
নিরাপত্তা-সংক্রান্ত কেবিনেট কমিটির এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং, অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি, প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ, ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন