ট্রাম্প ইঙ্গিত দিতেই কাশ্মীর সঙ্কটে নাটকীয় মোড়
ভিয়েতনামে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে ঐতিহাসিক বৈঠকে মিলিত হন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গতকাল বুধবারের এই বৈঠক কোনো সফলতা ছাড়াই শেষ হয়।
তবে, বৈঠক শেষে ভিয়েতনামে ব্রিফিংয়ে নানা প্রসঙ্গের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কথা বলেন কাশ্মীর সঙ্কট নিয়ে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যকার সাম্প্রতিক উত্তেজনা নিয়েও।
তিনি অবশ্য এদিন আশাবাদের কথায় শোনান, ‘ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা প্রশমনে যৌক্তিকভাবেই ভাল খবর আসছে।’
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে দ্বিতীয় দফা বৈঠক শেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘ভারত ও পাকিস্তান বিষয়ে আমার কাছে আকর্ষণীয় খবর আছে। তারা একত্রেই সেটি করতে যাচ্ছে। আমরাও তাদের এই ইস্যুতে যুক্ত হয়ে, থামানোর চেষ্টা করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন আমি যৌক্তিকভাবেই ভাল খবর দিতে পারব। আমি আশা করছি, দীর্ঘদিন চলে আসা দু’দেশের মধ্যকার বৈরি সম্পর্কের সমাধান অচিরেই হবে।’
এরপরই বৃহস্পতিবার বিকেলে সংসদ অধিবেশনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান জানান, গতকাল বুধবার আটক ভারতীয় পাইলট উইং কমান্ডার অভিনন্দনকে আগামীকাল শুক্রবার তারা ছেড়ে দিচ্ছেন।
সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা শাহবাজ শরীফ বক্তব্য দেয়ার সময় তাকে থামিয়ে দিয়ে ফ্লোর নিয়ে তিনি বলেন, ‘বিরোধীদলীয় নেতাকে থামিয়ে দেয়ায় আমি দুঃখিত। এখন আমি জানাচ্ছি, পাকিস্তান বিমানবাহিনী গতকাল বুধবার ভারতীয় যে পাইলটকে আটক করেছে, তাকে শান্তি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আগামীকাল শুক্রবার ছেড়ে দেয়া হচ্ছে।’
ইমরান খানের এ ঘোষণার পর সংসদ সদস্যরা টেবিল চাপড়ে তাকে সমর্থন জানান।
তিনি আরও বলেন, ‘গতকাল আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে টেলিফোন করেও কথা বলতে ব্যর্থ হয়েছি। তিনি উত্তেজনা আর বাড়তে না দেয়া পক্ষে নিজের অবস্থানের কথা জানিয়েছেন। আমরাও উত্তেজনা প্রশমনে পাইলটকে ছাড়ছি, এর মানে এই নয় আমরা ভয় পাচ্ছি।’
অবশ্য এর আগেই পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরিশ দেশটির জিও নিউজকে দেয়া সাক্ষাৎকারে জানান, আটক ভারতীয় পাইলটকে ছেড়ে দেয়ার বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
এর আগে গতকাল বুধবার নিয়ন্ত্রণরেখা অতিক্রম করে পাকিস্তান ভূখণ্ডে যাওয়ায় ভারতের দুটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার পাশাপাশি পাইলট উইং কমান্ডার অভিনন্দনকে আটক করে।
উল্লেখ্য, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামায় পুলিশ কনভয়ে আত্মঘাতী হামলায় ৪২ জওয়ান নিহত হন। পরে জইশ-এ মোহাম্মদ এই হামলার দায় স্বীকার করে। হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে আসছে ভারত। যদিও পাকিস্তান তা অস্বীকার করে আসছে।
পুলওয়ামা হামলার জবাব দিতেই গত ২৫ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৩টার দিকে নিয়ন্ত্রণরেখা পার হয়ে পাকিস্তানের ভুখণ্ডে হামলা চালায় ভারতের বিমানবাহিনী। পরে ভারত দাবি করে, ১২টি মিরাজ ২০০০ যুদ্ধবিমান ১ হাজার কেজি বোমা ফেললে কমপক্ষে ৩০০ সন্ত্রাসী নিহত ও তাদের ঘাঁটি গুড়িয়ে গেছে।
ভারতীয় যুদ্ধবিমানের নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘনের স্বীকার করলেও পাকিস্তান হতাহতের কথা অস্বীকার করে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন