সাতক্ষীরায় গভীর রাতে খ্রিস্টান মিশনে আগুন
সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় খ্রিস্টান মিশনে আগুন লেগে চারটি ঘর পুড়ে ছাই হয়েছে।
বুধবার গভীর রাতে উপজেলার মহান্দি গ্রামে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে কোনো প্রাণহানির ঘটনা না ঘটলেও মিশনের মূল্যবান কাগজপত্র এবং অন্যান্য সম্পদ পুড়ে গেছে। এতে প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।
খবর পেয়ে গ্রামবাসী পানি ঢেলে আগুন নিভিয়ে ফেলে। তবে সাতক্ষীরা থেকে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সহায়তা করে বলে জানান স্থানীয় খলিলনগর ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান রাজু।
তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে- বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত।
মিশনের পালক অনাদি মোহন জানান, তার সঙ্গে গ্রামের কয়েকজন খ্রিস্টান সদস্যের বিরোধ চলছিল। এরই জেরে এ ঘটনা ঘটেও থাকতে পারে। আগুনে ২০ লাখ টাকার সম্পদ নষ্ট হয়ে গেছে।
তিনি জানান, গভীর রাতে সবাই যখন ঘুমে অচেতন তখনই এ ঘটনা ঘটে। মুহূর্তেই টিনশেডের চারটি ঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এতে কমপক্ষে আটটি কম্পিউটার, দুটি ল্যাপটপ, কয়েকটি সিলিংফ্যান এবং ২৩৩ শিশুর জন্য রাখা শিক্ষা উপকরণ, ব্যাগ, শুকনো খাবার ও স্বাস্থ্যসেবার যাবতীয় উপকরণ পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
‘মহান্দি এজি মিশন’ নামে এই খ্রিস্টান মিশনটি ১২ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত। এখানে রক্ষিত এতদিনের যাবতীয় ডকুমেন্ট আগুনে পুড়ে গেছে। টিনশেডের এই ঘরের মধ্যে রয়েছে বাঁশের চাচের বেড়া। ফলে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এই মিশনে খ্রিস্টান শিশুদের লেখাপড়া শেখানো, তাদের স্বাস্থ্যসেবা- এমনকি মেয়েরা বিবাহযোগ্য হওয়া পর্যন্ত সব দায়িত্ব পালন করা হয়ে থাকে।
সর্বশেষ তার নিজ ঘরে আগুন লাগার আগেই তিনি তার মোটরসাইকেল, টিভি, ফ্রিজ বের করে আনেন। আগুন লাগা ঘরগুলো তালাবদ্ধ ছিল। এর জানালাগুলোও ভেতর থেকে ভালোভাবে লাগানো ছিল। এ জন্য সেখানকার কোনো সম্পদ তিনি চেষ্টা করেও বের করে আনতে ব্যর্থ হন।
মিশনের পালক অনাদি মোহনের অভিযোগ- এসব নিয়ে তার সঙ্গে স্থানীয় কয়েকজন খ্রিস্টান সদস্যের মতবিরোধ চলছিল।
অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনায় তালা থানায় একটি অভিযোগ দায়েরের কার্যক্রম চলছে বলে জানান পালক।
মিশনের নৈশপ্রহরী আসগর আলি জানান, রাতে পাহারাকালে তিনি কিছুক্ষণের জন্য তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েন। হঠাৎ আগুন দেখে তিনি চিৎকার দিলে লোকজন ছুটে আসেন।
সাতক্ষীরা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আজিজুর রহমান জানান, আমিসহ আমার সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে মিশনের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করার আগেই বেশিরভাগ সম্পদ পুড়ে যায়। পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
তালা থানার ওসি মেহেদি রাসেল বলেন, বিষয়টির তদন্ত চলছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন