নিজস্ব বাতাসে ছাতিমের ঘ্রাণ || নাজমীন মর্তুজা
(পর্ব প্রকাশের পর….)
জীবনের শৈশবের স্মৃতি গুলো মানুষের মনে বুড়ো বাজিকরের মতো ধুঁকতে ধুঁকতে
আসে বটে। শরতকাল আসে, অজস্র ফুল ফোটে,
ফুল ঝরে, কেউ ফিরে তাকায়, কেউ কুড়িয়ে নেয়, কেউ মালা গাঁথে, কেউ মাড়িয়ে যায়। আমি এখনো লোভী মাস্টার দাদার শিউলি গাছটার ফুল গুলোর জন্য।
এক আঁজলা যদি পাওয়া যেতো। যেবার শেষ ফুল ঝরা দেখেছিলাম, আহা, কতো অনাদর কাদায় আবর্জনায় মুখ থুবড়ে পড়ে আছে শিউলি গুলি। মানুষ অনেকেই জানে না
পৃথিবীর সেরা দশটা ফুলের মধ্যে শিউলি একটা। তা হয়তো বিশ্বাস করে না।
এই হেমন্তে বাঁশ ঝাড়ের ওপর দিনান্তে উঠে আসতো
শ্বেতকায় নিরেট এক বিশুদ্ধ কুয়াশা। পূর্ণ চাঁদকে
দেখাতো ছোট্ট রুটির মতো ।সাদা কুয়াশা হেঁটে যেতো আমাদের উঠোন দিয়ে, কুয়াশা ঝুলে থাকতো সজনে গাছে, নারিকেল গাছে, পুকুরের জলে।
আমাদের কামাত বাড়ির মাঠে লম্বা ইক্ষুর ডগায়
আকাশ পিদিম আলোকিত করতো পাড়াটাকে।
সন্ধ্যার পর হারিকেন জ্বালিয়ে শব্দ করে বীজগণিতের সুত্র মুখস্থ করতাম। বারান্দার এক কোণে ঘাপটি মেরে বসে থাকতে হতো, ভয় শিহরণ নিয়ে।
হেমন্তের সন্ধ্যায় হঠাৎ দূর থেকে ভেসে আসতো তরঙ্গ তুলে বিশ্রুত ছাতিমের ঘ্রাণ! ঋতুর বাজিকর এক আধটা স্মৃতির মাছ আলটপকা খেলা দেখায় বটে। এখন শরৎ হেমন্ত আমার কাছে চোরের মত মুখ লুকিয়ে চলে যায়। (চলবে….)
নিজস্ব বাতাসে ছাতিমের ঘ্রাণ : ১ম পর্ব
নিজস্ব বাতাসে ছাতিমের ঘ্রাণ : ২য় পর্ব
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন