কাপড়ে বাঁধা রেললাইনের নাট-বল্ট, আতঙ্কে থাকেন যাত্রীরা
কোথাও রেললাইন পাথর শূন্য। কোথাও রেললাইনের ফিশপ্লেটে নেই নাট-বল্ট। কোথাও আবার রেললাইনের ফিশপ্লেটের নড়বড়ে নাট-বল্ট পুরনো কাপড় দিয়ে বাঁধা। ট্রেন চলাচলের সময় রেললাইন নড়েচড়ে ওঠে। শব্দ হয় বিকট। যাত্রীরাও থাকেন আতঙ্কের মধ্যে।
এ চিত্র ময়মনসিংহের গৌরীপুর রেলওয়ে স্টেশনের প্লাটফরমের তিনটি রেললাইনের। প্রয়োজনীয় সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে প্লাটফরম ও এর বাইরেও রেললাইনের অনেক স্থানে পর্যাপ্ত পাথর নেই, নেই ফিশপ্লেটে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নাট-বল্ট। ফলে ঝুঁকি নিয়ে ট্রেন চলাচল করছে। এতে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে যে কোনো সময়।
এ বিষয়ে গৌরীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদ সভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম মিন্টু বলেন, ‘রেললাইনের ফিশপ্লেটের নাট-বল্ট, হুক, ক্লিপ পুরনো হয়ে যাওয়ায় ট্রেন চলাচলের সময় খুলে পড়ে যায়। অনেক সময় আবার চুরিও হয়। দুর্ঘটনা এড়াতে দ্রুত সংস্কার প্রয়োজন। নয়তো কুলাউড়ার মতো এখানেও ট্রেন দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।’
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, গৌরীপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে তিনটি রেলপথে প্রতিদিন আন্তঃনগর, লোকাল, কমিউটার ও মেইল ট্রেনসহ ৩২টি ট্রেন আসা যাওয়া করে। স্টেশনের প্লাটফরমে ট্রেন চলাচলের জন্য পাঁচটি পৃথক লাইন রয়েছে। কিন্তু দু’টি রেললাইন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকায় তিনটি দিয়ে ট্রেন চলাচল করে।
বুধবার বিকেলে গৌরীপুর স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, স্টেশন এলাকার চকপাড়া রেলগেট থেকে পশ্চিম ভালুকা পর্যন্ত এলাকায় তিনটি রেললাইনের অধিকাংশ জায়গা পাথর শূন্য। তিন রেললাইনের অর্ধ শতাধিক ফিশপ্লেটে পর্যাপ্ত নাট-বল্ট নেই। প্রতিটি ফিশপ্লেটে চারটি করে নাট-বল্ট থাকার কথা। কিন্তু এসব ফিশপ্লেটে তিনটি কিংবা দু’টি করে নাট-বল্ট রয়েছে। রেলওয়ের উপসহকারী কার্যালয়ের সামনে এক ও দুই নম্বর লাইনের কয়েকটি স্থানে ফিশপ্লেটে চারটি নাট-বল্ট মধ্যে কোথাও তিনটি, দু’টি দেখা গেছে। আউটার সিগন্যাল এলাকায় রেললাইনের সংযোগস্থলের হুক বের হয়ে গেছে।
স্টেশনের প্লাটফরম এলাকা সংলগ্ন দুই নম্বর রেললাইনের বিভিন্ন জায়গায় ফিশপ্লেটে পর্যাপ্ত নাট-বল্ট নেই। এখানকার এক জায়গায় ফিশপ্লেটের নড়বড়ে নাট-বল্ট বেঁধে রাখা হয়েছে পুরনো কাপড় দিয়ে।
অপরদিকে স্টেশনের প্লাটফরম সংলগ্ন তিন নম্বর রেললাইনের অবস্থা অন্য দুই রেললাইনের চেয়ে তুলনামূলক ভালো। তবে ওই লাইনেও টিসিএম টেলিকম অফিসের সামনে ও রেলওয়ে কোয়ার্টার এলাকায় বেশ কয়েকটি জায়গায় রেললাইনের ফিশপ্লেটে চারটির বদলে তিনটি করে নাট-বল্ট দেখা গেছে।
গৌরীপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার আব্দুর রশিদ বলেন, ‘রেললাইনের ফিশপ্লেটে চারটি করে নাট-বল্ট থাকে। তিনটি থাকলে ট্রেন চলাচল করতে বড় ঝুঁকি থাকে না। কিন্তু দু’টি থাকলে ঝুঁকি থেকে যায়। কিন্তু এই সেক্টরটা আমার আওতাধীন নয়, এটা রেলওয়ের যন্ত্র প্রকৌশল বিভাগ দেখভাল করে।’
গৌরীপুর রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী ওয়াহিদুল ইসলাম জানান, রেলওয়ের এসব ত্রুটি মেরামত করার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন