৪’শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ
গাইবান্ধায় বন্যার কারণে জেলার সাত উপজেলার ৩২১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদানসহ যাবতীয় কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ২৮১টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৮৪টি ও কলেজ ৪টি। ৯৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খোলা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র। চারটি সরকারী প্রাথমিক এবং একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভবন ইতিমধ্যে ভাঙনে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
এদিকে গত ২ জুলাই থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনের শুরু হওয়া বিএ (পাশ) দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষার স্থগিতের দাবি জানিয়েছেন কবলিত এলাকার শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিনে, স্মরণকালের ভয়াভয় বন্যায় গাইবান্ধা শহরসহ ৫ উপজেলার বিস্তীর্ণ জনপদ। মানুষের স্বাভাবিক কাজকর্ম স্থবির হয়ে পড়েছে। ঘরবাড়ি ছেড়ে শেষ সম্বলটুকু নিয়ে মানুষ আশ্রয় নিয়েছে পাউবোর বাঁধে, সড়কে, সরকারী আশ্রয় কেন্দ্রে ও আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে। অনেকে আবার এখনও আটকা পড়ে আছেন নিমজ্জিত বাড়িতেই।
বৃহস্পতিবার জেলায় প্রায় সব নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও তিস্তার পানি বিপদসীমার নিচে রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান জানান, সকালে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার ১৫০ সেন্টিমিটার, ঘাঘট নদীর পানি ৯৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে করতোয়া নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেও বিপদসীমার নিচে রয়েছে। তিস্তার পানিও বিপদসীমার নিচে চলে গেছে।
জেলা ত্রাণ শাখার সূত্রে জানা যায়, বন্যায় পানিবন্দি পরিবারের সংখ্যা তিন লাখ ৯৭ হাজার ৯৮টি। পানিতে তলিয়ে গেছে নয় হাজার ৬০ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল। অন্যদিকে গাইবান্ধা সঙ্গে সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা ও ফুলছড়ির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। সকালে নতুন করে গাইবান্ধা শহরের পার্ক রোড, ডিবি রোড়, পিকে বিশ্বাস রোডে পানি উঠেছে। রেল লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় গাইবান্ধার রেল যোগাযোগও বন্ধ।
ফুলছড়ির ঘোলদহ গ্রামের রাশেদুল ইসলাম নামে এক বিএ পরীক্ষার্থী জানান, ঘরবাড়ি পানিতে নিমজ্জিত। বইপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। সদরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে সবাই আশ্রয় নিয়েছি। এ অবস্থা আমার মত আরও অনেক পরীক্ষার্থীর। চলমান পরীক্ষাটি স্থগিত করলে আমাদের জন্য ভালো হত।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হোসেন আলী জানান, পাঠদান বন্ধ ২৭১টি বিদ্যালয়ের মধ্যে সাতটি ভাঙনে নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে, গাইবান্ধা সদরের চিথুলিয়া চর, চিথুলিয়া দিগর নতুনপাড়া ও মৌলভীর চর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ফুলছড়ির হাড়ভাঙ্গা, ধুলিপাট ধোয়া, জামিরা ও আঙ্গারিদহ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। এছাড়া ৫৮টি বন্যার্তদের আশ্রয় কেন্দ্র ও ২১৬টিতে বন্যার পানি উঠেছে।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এনায়েত হোসেন জানান, জেলায় পাঠদান বন্ধ ৮৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ভাঙনে নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে ফুলছড়ির চন্দনসর উচ্চ বিদ্যালয়। ৩৮টিতে বন্যার্তদের আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং ৪৬টিতে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন