আবারও বিএসএমএমইউতে গণস্বাস্থ্যের অ্যান্টিবডি কিটের পরীক্ষা
আবারও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়েই (বিএসএমএমইউ) গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত করোনা অ্যান্টিবডি কিটের তুলনামূলক এক্সটারনাল ভেলিডেশন (Comparative External Validation) পরীক্ষা হবে। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তারা কিটের মান উন্নয়নের জন্য রি-এজেন্ট বা মালামাল আমদানির এনওসি (নো অবজেকশন সার্টিফিকেট) পেয়েছেন। এখন মালামাল এলেই তারা কাজ শুরু করবেন। এরপর আবারও বিএসএমএমইউতে কিটের এক্সটারনাল ভেলিডেশন পরীক্ষা করানো হবে। এজন্য আবারও গণস্বাস্থ্যের বাড়তি ২০ থেকে ৩০ লাখ টাকা খরচ হবে। একইসঙ্গে ২ মাসের বেশি সময়ও লাগবে।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অ্যান্টিবডি কিটের উদ্ভাবক দলের প্রধান ডা. বিজন কুমার শীল বলেন, আগেও কিটের এক্সটারনাল ভেলিডেশন হয়েছিল বিএসএমএমইউতে। এখন নতুনভাবে আবারও হবে। এটার প্রক্রিয়া চলছে। সেজন্য কিছু রি-এজেন্ট দেশের বাইরে থেকে আনার কথা। সেটা আমদানির এনওসি পেয়েছি। সেটা এলেই কাজ শুরু হবে। আমরা আবারও বিএসএমএমইউতে করবো। যেহেতু তারা এই টেস্টটা ভালো জানেন। তাদের স্যাম্পলও আছে। এখন শুধু স্যাম্পলগুলোকে অ্যাডজাস্ট করতে হবে।
এর আগে গত ১৬ জুন বিএসএমএমইউ গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অ্যান্টিবডি কিটের পরীক্ষা করে সুনির্দিষ্ট সুপারিশসহ রিপোর্ট জমা দেন ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরে। কিন্তু কিটের সেন্সেটিভিটি ৯০ শতাংশের নিচে হওয়ায় কিটের নিবন্ধনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কিটের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, র্যাপিড অ্যান্টিবডি কিটের যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ প্রশাসনের (এফডিএ) আমব্রেলা গাইডলাইন অনুসরণ করে এক্সটারনাল ভ্যালিডেশন করতে যে প্রক্রিয়া করার কথা, ঔষধ প্রশাসন বলছে তার কোনও ফ্যাসিলিটি বর্তমানে বাংলাদেশে নেই। দেশে সেই প্রক্রিয়া স্থাপন করে পরীক্ষা করতে কমপক্ষে দুই মাস লাগবে। এতে বাড়তি ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা খরচ হবে গণস্বাস্থ্যের।
গণস্বাস্থ্য কিট প্রকল্পের সমন্বয়ক ডা. মুহিবুল্লাহ খোন্দকার বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলছেন দেশীয় শিল্পকে, দেশীয় বিনিয়োগকে আকর্ষণ করতে, সেখানে ওষুধ প্রশাসন এখন পর্যন্ত কিট নিয়ে তিনবার নিয়ম বদলিয়েছে। প্রতিবারই এমন সব আইন তৈরি করতেছে যেটা স্থানীয় শিল্পের বিকাশে বাধা। যাতে স্থানীয় শিল্পের কোনও বিকাশ না হয়। প্রশাসনের নীতিমালা অনুযায়ী আমাদের অ্যান্টিজেন কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষা বাংলাদেশে একদমই অসম্ভব। আর অ্যান্টিবডি কিটের এখন আবার পরীক্ষা করাতে ৩০-৪০ লাখ টাকা খরচ করতে হবে। সময়ও লাগবে। জিনিসটা করানোই কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এমন সব শর্ত দিচ্ছে তারা। তারপরও চেষ্টা করছি টেস্টগুলো কীভাবে করা যায়।
গবেষণার জন্য নিজের বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত করোনা কিট দিয়ে অ্যান্টিবডি টেস্ট শুরু করবে গণস্বাস্থ্য হাসপাতাল। ধানমন্ডির নগর হাসপাতালে আগামী ২৯ আগস্ট থেকে অ্যান্টিবডি টেস্ট শুরু করবে তারা। পরীক্ষার খরচ পড়বে ৪শ’ টাকার মতো। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমরা গবেষণার জন্য অ্যান্টিবডি কিটের টেস্ট শুরু করবো। গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে টেস্ট করা যাবে। খরচ পড়বে ৪শ’ টাকার মতো। এটা আমরা গবেষণার জন্য নেবো।
করোনাভাইরাসের টেস্ট করার জন্য গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে বসানো হচ্ছে পিসিআর পরীক্ষা ল্যাব। আগামী ২৯ আগস্ট সেটির উদ্বোধন করা হবে। তারপর থেকে করোনা টেস্ট শুরু হবে। জানা গেছে, নগর হাসপাতালে করোনা টেস্টের খরচ দুই রকম ধরা হয়েছে। যাদের নগর হাসপাতালের ইন্স্যুরেন্স আছে তাদের খরচ পড়বে আড়াই হাজার টাকা আর যাদের ইন্স্যুরেন্স নেই তাদের সব মিলিয়ে খরচ পড়বে সাড়ে তিন হাজার টাকা। তবে এই খরচ আরও কমতেও পারে। প্রতিদিন দুই শিফট মিলিয়ে ২শ’ জনের টেস্ট করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ২৯ তারিখ থেকে পিসিআর ল্যাবে করোনা পরীক্ষা শুরু হবে নগর হাসপাতালে। দিনে দিনে পরীক্ষার রেজাল্ট দিয়ে দেওয়া হবে। তবে সেজন্য বেলা ১১টার আগে স্যাম্পল দিতে হবে। প্রথমদিকে ২শ’ জনের টেস্ট করা হবে। পরবর্তীতে ৩শ’ জনের টেস্ট হবে। দুই-একদিনের মধ্যে বিস্তারিত জানা যাবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন