সাতক্ষীরায় গাছে গাছে উঁকি আমের গুটির, বাতাসে দুলছে স্বপ্ন আম চাষীর

‘সংসার সাগর তরঙ্গের মেলা, আশা তার একমাত্র ভেলা’, তাই আশায় বুক বেধে আম চাষিরা আগাম শুরু করেছেন পরিচর্যা।
আগাম আমের দ্বিতীয় রাজধানী সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায় গাছে গাছে উঁকি দিচ্ছে চাষীর স্বপ্ন আমের গুটি।

চলতি মৌসুমে অনুকুল আবহাওয়ায় গুটি নষ্ট হবার সম্ভাবনা কম। তাই এবারও আমারে বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছেন আম চাষিরা।
গত বছরের আম্পানের ক্ষতি পুষিয়ে উপজেলায় বিভিন্ন জাতের নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে এবার বিদেশে রপ্তানিও করা যাবে বলে তারা মনে করেছেন।

সরজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন এলাকার আম গাছ গুলোতে ছোট বড় আকারে গুটিতে ভরে গেছে। অনেক বাগানে এখন পরিপূর্ণ আমের ধরণ আসতে শুরু করেছে। সময়ের ব্যবধানে ধীরে ধীরে আম বড় হচ্ছে। এ বছর গাছে গুটির পরিমান বেশি। তাই বাতাসে দুলছে আমচাষীদের স্বপ্ন আর ভাগ্য।

আমচাষী ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্মকর্তারা এবারও কলারোয়া উপজেলায় আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন।

তাদের বক্তব্য- প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে ও সময় মতো পরিচর্যা হলে চলতি মৌসুমে আমের ফলন গত সকল মৌসুমকে টপকে ছাড়িয়ে যাবে। প্রকৃতি এরকম থাকলে ফলন লক্ষ্যমাত্র অতিক্রম করবে। তাদের একমাত্র ভরসা চলতি মৌসুমে তারা আম থেকে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে।

উপজেলায বিভিন্ন জাতের আম চাষ হয়ে থাকে যেমন- হিম সাগর, ন্যাড়া, গোবিন্দভোগ, মল্লিকা, আম্প্রপালি, বোম্বায়, লতা, দেশীয় লতা সহ হরেক রকমের নানান নামের।

আম চাষী ওমর ফারুক জানান- ‘এ বছরের আবহাওয়া আমের জন্য কিছুটা অনুকুলে রয়েছে। এর মধ্যে অনেক গাছে গুটি ছাড়িয়ে আমে পরিণত হয়েছে।’

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, কৃষি সম্প্রসারন অধিদফতরের পরামর্শে গাছে মুকুল আসার ১৫ থেকে ২০ দিন আগেই আম চাষী ও ব্যবসায়ীরা পুরো গাছ সাইপারম্যাক্রিন ও কার্বারিল গ্রুপের কীটনাশক দিয়ে ভালোভাবে স্প্রে করে গাছ ধুয়ে দিয়েছেন। এতে গাছে থেকে শোষক জাতীয় পোকা নিধন হয়েছে।

উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম জানান, ‘ধান, পাট বা অন্য ফসলের মত আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রাও কৃষি অধিদফতরের কাছেই থাকে। কারণ কলারোয়া উপজেলার আম দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশের বাজারে যায়।’
তিনি আরো জানান, ‘এ বছর উপজেলায় আমচাষ হয়েছে ৫৭০ হেক্টর প্রতি হেক্টর জমিতে। হেক্টরপ্রতি ৩৫ থেকে ৪০ মন আমের ফলন ধারণা করা হচ্ছে। বর্তমানে করোনাকালীন ও লকডাউনের সময়েও অনলাইনে আমসহ কৃষি সংক্রান্ত সকল পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।’