কুড়িগ্রামে অর্মত্য ফাউন্ডেশনের করোনাকালীন অসহায় মানুষের মাঝে সহায়তা প্রদান

সত্তরের বেশি বয়স নূরজাহান বেগমের কুড়িগ্রামের শহরতলীর মন্ডল পাড়ায় তার বাড়ী। স্বামী মোজ্জামেল হোসেন ৫ বছর আগে মারা গেছেন ৪ পুত্র সন্তান তার। সবাই আলাদা খায়। বয়সের ভারে নূরজাহান বেগম ঠিকমত কাজও করতে পারেন না মানুষের সাহায্যে জীবনটাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন পাঁচশত টাকায় একটি পরিবারের এক সপ্তাহের খাবার প্রকল্পে অর্মত্য ফাউন্ডেশনের একটি খাবার প্যাকেট পেয়ে দারুন খুশী নূরজাহান বেগম আগামী ১০দিন তাকে আর খাবারের চিন্তা করতে হবে না।

নূরজাহান বেগমের মত বিভিন্ন এলাকা থেকে আরও এসেছেন ষাটের বেশি বয়সী অসুস্থ সুফিয়া বেগম, প্রতিবন্ধী রিকশা চালক মোহম্মদ আলী(৫৫) বাস ড্রাইভার শহীদুল হক , চায়ের দোকানাদার রফিকুল সহ অনেকে।সবাই এসেছেন খাবারের একটি প্যাকেটের আশায়। করোনাকালীন সময়ে লকডাউনে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ধরলা পারের তালতলা, সওদাগর পাড়া,মুনসীপাড়া সহ শহরের খেটে খাওয়া আর অসুস্থ মানুষগুলো।

রমজান মাসে এমনিতেই তাদের পরিবারগুলোতে খরচ বেশী। কিন্তু উপায় নেই সাধ্য নেই মনের মতো করে খাবার কেনার কাজ নেই এমনি এক কঠিন মুহুর্তে অর্মত্য ফাউন্ডেশনের এই খাদ্য সহায়তা তাদের পরিবারে কিছুটা হলেও স্বস্তি নিয়ে এসেছে। এভাবে খাবারের প্যাকেট পেয়ে তারা প্রাণ ভরে দোয়া করেছেন অর্মত্যের জন্য। জীবন সংকটকালীন সময়ের এ বিপদে এই ফাউন্ডেশন তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। এ কৃতজ্ঞতার কথা তারা বার বার স্বীকার করলেন। সেখানে তারা ছোট পরিসরে অর্মত্যের জন্য আয়োজিত দোয়াও করেছে।যারা তাদের এ খাবারের ব্যবস্থা করেছে তাদের সবার জন্য তারা দোয়া করেছেন।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ আর নদী ভাঙ্গনের শিকার এ জেলার মানুষ প্রতিনিয়ত প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে আসছে যুগের পর যুগ সময় বদলেছে। এখন মানুষ কাজের সন্ধানে যায় ঢাকা সহ সারা দেশে। বদলে গেছে জেলার মামুষের জীবন যাত্রা। মঙ্গা নামের শব্দ আর নেই এ অঞ্চলে।তবে করোনা মহামারীর এ সংকটকালীন সময়ে যে দয়ালু আর মানবিক মানুষ জন কুড়িগ্রামের এসব মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন তার জন্য কৃতজ্ঞ পুরো কুড়িগ্রামবাসী। এ কৃতজ্ঞতা অর্মত্য ফাউন্ডেশনের কর্তৃপক্ষের কাছে। এ ফাউন্ডেশন এমনি ভাবে এগিয়ে যে যায় এ প্রত্যাশা সব সময় জেলাবাসীর।

অর্মত্য ফাউন্ডেশনের কর্তৃপক্ষ জানান এসব আমাদের সামান্য আয়োজন যা প্রয়োজনের তুলনায় নগন্য একেকটি স্পটে ১০০ মানুষের খাবারের ব্যবস্থা করতে ৫০ হাজার টাকা লাগে। কুলাউড়া, ময়মনসিংহ, বাগেরহাটের পর আমরা আয়োজনটি করেছি কুড়িগ্রামে। মানুষের হাতে খাবার ধরিয়ে দিয়ে নির্লজ্জ ছবি তোলার প্রতিযোগিতা যেন নির্বাচন করা হবে! এসব একজন অকাল প্রয়াতের আত্মার শান্তি কামনায় বিনীত দান। আমরা কোনদিন এসব করে বাংলাদেশে নির্বাচন করতে যাবোনা মানুষের হাতে সামান্য দান তুলে দিয়ে তার দূর্বলতাকে চিহ্নিত করার মাঝে কোন বীরত্ব কৃতিত্ব নেই। আমরা সারা বাংলাদেশ জুড়েই খাবার নিয়ে যেতে চাই। যখনই হাতে ৫০ হাজার টাকা জমা হয় তখনই ছুটে যাই নতুন কোন জেলায়। মানুষই আমাদের আরাধ্য। মানুষকে সম্মান করলে আল্লাহ খুশি হন। আপনি আপনারা যত বেশি হাত বাড়াবেন তত গতিশীল থাকবে অমর্ত্য ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম।